সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। দ্রুত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এহেন সংকট কালে প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে এবার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরেও দাপট দেখাচ্ছে এই মারণ রোগ। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি শিবিরে অত্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: হাজারো বিতর্ক উসকে এবার ‘মানসিক চিকিৎসা’ করাতে গেলেন নোবেল, ফেসবুকে জানালেন নিজেই]
জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন থাকবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে। করোনা সংক্রমণ রুখতে গত একমাস ধরে দেশে বিধিনিষেধ বলবৎ করেছে হাসিনা প্রশাসন। কিন্তু এবার রোহিঙ্গা শিবিরে মারণ ভাইরাসটির হানায় রীতিমতো চিন্তিত প্রশাসন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত সংবাদমাধ্যমে জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে জরুরি ওষুধ, খাদ্য ও গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের কাজ চলবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া জানান, করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির নিয়ে সবাই উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল। কয়েক দিন ধরে জেলার আক্রান্ত করোনা রোগীদের অধিকাংশই শরণার্থী শিবিরের। কয়েক মাস আগে প্রতিদিন এক থেকে দু’জন করে করোনায় আক্রান্ত হলেও ইদের পর থেকে হঠাৎ দৈনিক ২০ থেকে ৪৫ জনের মতো করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোয় ৯১৩ জন রোহিঙ্গা শিশু, মহিলা ও পুরুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ১২ জন মারা গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কক্সবাজারে ৩৪টি ও নোয়াখালির ভাসানচরে ১টি-সহ ৩৫টি শরণার্থী শিবিরে ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তবে নোয়াখালি জেলার ভাসানচরে কোনও রোহিঙ্গার শরীরে এখনও করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে মধ্যে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-২ ডব্লিউ, কুতুপালং ক্যাম্প-৩, কুতুপালং ক্যাম্প-৪, জামতলি ক্যাম্প-১৫ ও টেকনাফের লেদা ক্যাম্প ২৪ শিবিরকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে শরণার্থীদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনায় রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কপালে।