সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বঙ্গে টিকাকরণ দ্রুতগতিতে করার চেষ্টা চললেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সরবরাহ। কেন্দ্রের তরফে কোভিড (COVID-19) টিকা কম পাঠানো হচ্ছে, এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন, একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়ে চিঠি লিখেছেন। কিন্তু তাতেও সুরাহা মেলেনি। এখনও পর্যাপ্ত টিকা পায়নি বাংলা। যার জেরে বারবার টিকাকরণ কর্মসূচি মাঝপথে বন্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু এত প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকাকরণে রেকর্ড গড়ে ফেলল ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) পুরসভা। খুব কম সময়ের মধ্যেই এখানে ১০০ শতাংশ টিকাকরণ শেষ। প্রথম ডোজ পেয়ে গিয়েছেন পুর এলাকার সব বাসিন্দা। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ২৫ শতাংশের তাও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বলা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে টিকাকরণের এহেন সাফল্যে রাজ্যে রীতিমতো মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে এই পুরসভা।
মুশকিল আসান ভ্যাকসিন অন হুইলস (vaccine on wheels)। আর গাড়ি করে করোনা টিকা এলাকার বয়স্কদের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েই নিমেষে কঠিন কাজ সহজ করেছে ডায়মন্ড হারবার পুর কর্তৃপক্ষ। এই পুরসভায় মোট ১৬টি ওয়ার্ড। নাগরিকের সংখ্যা ৫৪ হাজার। এর মধ্যে আবার ৪৩ হাজার বাসিন্দা আঠারোর ঊর্ধ্বে। এখানে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছিল গত ১৩ মে থেকে। প্রথমে দুটি ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল। তারপর কাজে গতি আনতে প্রতিটি ওয়ার্ডেই আলাদা ক্যাম্প করে ভ্যাকসিনেশন (Vaccination) শুরু হয়। এছাড়া চালু হয় – ভ্যাকসিন অন হুইলস। এর মাধ্যমে এলাকার বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষজনের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল করোনা টিকা। একজন নোডাল অফিসারের নেতৃত্বে কাজ করত ২৪ জনের একটি টিম। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সাফল্য বলে মনে করছেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর হার সামান্য ঊর্ধ্বমুখী, একদিনে শতাধিক আক্রান্ত এই জেলায়]
নোডাল অফিসার দেবশংকর পান্ডে জানাচ্ছেন, টিকাকরণের জন্য তাঁর অধীনে কাজ করেছেন ৪ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ৪ জন ফার্স্ট টায়ার সুপারভাইজার (FTS) এবং ১৬ জন আশা কর্মী। এই টিম নিয়েই গোটা ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় কাজ হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) ডাক্তার দেবাশিস রায় বলছেন, এত কম সময়ের মধ্যে এতজনকে টিকা দেওয়াটা নজির। তবে কাজ বাকি আরও বেশ কিছু। এই এলাকার অনেক বাসিন্দাই এলাকার বাইরে ছিলেন কর্মসূত্রে বা অন্য কোনও কারণে। টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শেষ হয়ে গেলেও, তাঁরা এলাকায় ফিরলে ফের তাঁদেরও খোঁজ করে পুরকর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিন দিয়েছেন। তাই হাতে গোনা কয়েকজনকে প্রথম ডোজ দেওয়ার কাজ চলছে এখনও। তবে রাজ্যের আর কোনও পুরসভায় এত দ্রুত করোনা টিকাকরণ হয়নি বলেই দাবি ডায়মন্ড হারবার পুরসভার।