রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: এবার করোনার (Coronavirus) বিদেশি স্ট্রেন থাবা বসালো নদিয়ায়। দুবাই ফেরত করিমপুরের বাসিন্দা এক যুবকের শরীরে মিলল এই ভাইরাসের অস্বিত্ব। আক্রান্ত যুবককে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভরতি করেছেন। এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। আক্রান্তের সংস্পর্শে আসায় যাঁদের লালা রস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাঁদের বাড়ির বাইরে বেরোনো নিষেধ।
জানা গিয়েছে, ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক কিছুদিন আগে শ্রমিকের কাজে দুবাই গিয়েছিলেন। ছুটি পেয়ে শুক্রবার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছতেই রুটিনমাফিক ওই যুবকেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এরপর বাসে শনিবার সকালে বাড়ি পৌঁছন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা যায়, অসুস্থতা অনুভব না করায় বাড়ি ফেরার পর বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজন সকলের সঙ্গেই দেখা করেন তিনি। আক্রান্তের প্রতিবেশীর বাড়িতে ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। সেখানেও যান তিনি। এরপর পরিবারের লোকজন ফোন মারফত জানতে পারেন তাঁদের সন্তান করোনায় আক্রান্ত। ফোন আসার কিছু সময় পরেই পুলিশ ও স্বাস্থ্যদপ্তরের লোকেরা ওই যুবককে কলকাতায় নিয়ে আসে। আক্রান্তের বাবার কথায়, “স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া করছিল। কোনও শারীরিক অসুস্থতা বোঝা যায়নি। দুবাই বিমানবন্দরে ছেলের লালারস নমুনা নিয়ে পরীক্ষার পর বিমানে উঠতে দিয়েছিল। কী করে এমন হলো বুঝতে পারছিনা।”
[আরও পড়ুন: বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার, ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ১৮৮ জন]
জানা গিয়েছে, ওই যুবক যে বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন সেখানকার ২২৭ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। নতুন বিদেশি স্ট্রেন এর খোঁজ মেলায় চিন্তিত এলাকার সাধারণ মানুষ, স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসন। নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “সোমবার রাতে জানতে পারি কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে আসা করিমপুরের নাটনা গ্রামের দুবাই ফেরত যুবক করোনার নয়া বিদেশি স্ট্রেনে আক্রান্ত।” এবিষয়ে করিমপুর ১ নম্বরের বিডিও অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকা স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা ছাড়াও বাড়ি সংলগ্ন প্রতিবেশী মানুষদের অনুরোধ করা হয়েছে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বাড়ি থেকে যেন বের না হন। কোনওরকম সমস্যা হলে স্থানীয় প্রশাসন সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। ঘটনার দিকে প্রশাসন নজর রাখছে ভয় পাবার কিছু নেই।” উল্লেখ্য, দেশের অন্য শহরকে টেক্কা দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার মতো এবার রেকর্ড সময়ে কোভিডের টিকাদান সম্পূর্ণ করতে বিশেষ অভিযানে নামল কলকাতা পুরসভা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে করোনা টেস্ট শিবিরের ধাঁচে সরকারি ছুটির দিন ও রবিবারেও ভ্যাকসিন চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরসভা।