সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনে করোনা (Corona Virus) সংক্রমণ নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এল। চিনের ইউহান (Wuhan) শহরের কাঁচা মাংসের বাজার থেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বলে ধারণা করা হয়েছে। এবার করোনার আঁতুড়ঘর ইউহান শহরে সমীক্ষা চালিয়ে চোখ কপালে উঠেছে চিনের স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের।
ইউহান শহরের বাসিন্দারা যাঁরা করোনা থেকে পুরোপুরি সেরে উঠেছেন তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগীর ফুসফুস (Lungs) মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনার মারণ ছোবল থেকে তাঁরা প্রাণে বেঁচে ফিরলেও, ফুসফুস কিন্তু ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছে। এই ৯০ শতাংশের মধ্যে কয়েক জনের ফুসফুসের অবস্থা এতটাই খারাপ, বাড়ি ফেরার পরেও অক্সিজেন মেশিনের উপর ভরসা করে কাটাতে হচ্ছে। এঁদের মধ্যে ৩৫ থেকে ৮০ নানা বয়সের মানুষ রয়েছেন। এঁদের বাকি জীবন অক্সিজেন মেশিন নেবুলাইজার, ইনহেলারের উপর নির্ভরশীল। চিনের সংবাদংস্থা জিনহুয়া এই খবর প্রকাশ করে জানিয়ছে, ইউহানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১০০ শতাংশই রোগ মুক্ত বলে সরকার দাবি করেছে। কিন্তু, তাঁদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য তাঁদের নিয়মিত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগযোগ রেখে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন : নতুন ভাইরাসের জেরে চিনে মৃত ৭, ফের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় কাঁপছে বেজিং]
জিনহুয়া এবং সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট খবরের কাগজ জানিয়েছে, ইউহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝোংনান হাসপাতালের ডিরেক্টর পেং ঝিয়ং জানান, তাঁর নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল ১০০ জন সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। গত এপ্রিল থেকেই ওই রোগীরা চিকিৎসক দলটির পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সেরে ওঠা করোনা রোগীরা ৬ মিনিটে কষ্টেসৃষ্টে ৪০০ মিটারের বেশি হাঁটতে পারছেন না। তাঁদের হাঁফ ধরছে। ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অথচ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে ৬ মিনিটের মধ্যে দ্রুত ৫০০ মিটারের বেশি হাঁটতে। ওয়াকিং টেস্ট ওলাং টেস্টে এই দুর্বলতা ধরা পড়ার পরই বুকের স্ক্যান করা হয়। তখনই ফুসফুসের খুব খারাপ অবস্থা ধরা পড়েছে। এরপরই তাঁরা এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনেন।
[আরও পড়ুন : করোনা মোকাবিলায় ভারত ও চিনের থেকে ভাল কাজ করছে আমেরিকা, দাবি ট্রাম্পের]
এছাড়া দেখা যাচ্ছে, ইউহানে করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীরা বেশিরভাগই অক্সেজেন মেশিন ছাড়া বাড়িতে থাকতে পারছেন না। তাঁদের শ্বাসকষ্ট বেশি হচ্ছে দিনের বেলা এবং চলাফেরা করলে। ফলে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেশিনের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডংজিমেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক লিয়াং টেংগসিকিয়াও করোনা মুক্ত শতাধিক রোগীর উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন। এই রোগীদের গড় বয়স ছিল ৬৫ থেকে ৭০। তাঁদের প্রায় সবাই অক্সিজেন মেশিন, অক্সিমিটার নিয়ে চলাফেরা করছেন।
এছাড়া নানা বয়সের করোনা মুক্ত রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও ভালভাবে গড়ে ওঠেনি। অর্থাৎ করোনা মুক্ত হলেও তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। ফলে হুবেই প্রদেশের ইউহান শহর করোনা মুক্ত হলেও এখনও মৃত্যুর আতঙ্কে ভুগছে।
The post ৯০ শতাংশ করোনাজয়ীরই ফুসফুস ঝাঁজরা, কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও, দাবি বিশেষজ্ঞদের appeared first on Sangbad Pratidin.