স্টাফ রিপোর্টার, মালদহ: বাংলাদেশি সন্দেহে ফের ওড়িশায় আক্রান্ত মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিক। দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শ্রমিকের নাম আতিউর রহমান। তিনি মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশায় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন বৈষ্ণবনগরের যুবক আতিউর রহমান। কিন্তু অভিযোগ, বাংলায় কথা বলার জন্য বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁকে প্রকাশ্যেই ব্যাপক মারধর করা হয়। মারের চোটে গুরুতর আহত আতিউরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁরই এক সহকর্মী। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত বৈষ্ণবনগর থানার শোভাপুর পারদেওনাপুর এলাকায় আতিউরের পরিবার। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ওড়িশার উদ্দেশে রওনা দিলেও তাঁর সহকর্মীরাই আতিউরকে মালদহে ফিরিয়ে আনেন। বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক।
আতিউরের বাবা আমির হোসেন জানান, গত তিন বছর ধরে তাঁর ছেলে ওড়িশার সম্বলপুরে রাজমিস্ত্রি হিসাবে কাজ করছিলেন। ছেলে আক্রান্ত হয়েছে শুনে খুব আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন তিনি। আক্রান্ত শ্রমিকের বাবা বলেন, "ছেলেকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে সে ঠিকমতো চলাফেরাই করতে পারবে কি না, বুঝতে পারছি না।"
উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত ওড়িশায় গত কয়েকমাসে একের পর এক বাঙালি নিগ্রহের ঘটনা সামনে এসেছে। সম্প্রতি ওড়িশার সম্বলপুরে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে খুন হয়েছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানা। শনিবার এই ইস্যুতে গর্জে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘প্রতিটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের উপর যে নির্মম অত্যাচার ও নিগ্রহ নেমে এসেছে আমরা তাকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। বাংলা ভাষা বলা কোনো অপরাধ হতে পারে না। আমরা নিগৃহীত, সন্ত্রস্ত ও অত্যাচারিত সেইসব পরিযায়ী বাংলাভাষী পরিবারের পাশে আছি, সেই সব পরিবারকে আমরা সমস্ত রকম সমর্থন দেব।’ তিনি এও জানিয়েছেন যে নিহত জুয়েল রানাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ইতিমধ্যে সুতি থানায় জিরো এফআইআর রুজু করেছে, ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ওড়িশা যাচ্ছে রাজ্য পুলিশের একটি দল।
