সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাস (Coronavirus) ধ্বংস করতে সক্ষম, এমন এক নাকের স্প্রে (Nasal spray) তৈরির দাবি করেছিল বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (BRICM)নামের সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। এবার তাদের তৈরি বিশেষ স্প্রে-টি বাজারজাত করার ঘোষণা করল সংস্থা। বিআরআইসিএম-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. মালা খান জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসে স্প্রেটি বাজারে আসবে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গোসেফ ওরো ন্যাজাল স্প্রে’। ট্রায়াল পর্বে এই সলিউশনের সুফল মিলেছে বলেও দাবি সংস্থার এমডি-র।
বিআরআইসিএম MD আরও জানান, ‘‘বঙ্গোসেফ ওরো ন্যাজাল স্প্রে এখনও ট্রায়ালে আছে। তবে ট্রায়ালের ফলাফল খুবই ইতিবাচক। আমরা আশা করছি, আগামী মে মাসে এটি বাজারে আনতে পারব আমরা। প্রাথমিকভাবে এই স্প্রে’র মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা এটি বাজারজাত করে কোনও মুনাফা করব না। এই স্প্রে তৈরি করতে যে খরচ হয়েছে, তার হিসেবমতো মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে।” চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস জানিয়েছিল, তারা করোনা ভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম একটি স্প্রে তৈরি করেছে। যা নাক, মুখগহ্বরে স্প্রে করলে করোনার জীবাণু ধ্বংস হবে।
[আরও পড়ুন: শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে রাজি রাশিয়া, কী সেই শর্ত?]
সেসময় তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি জানিয়েছিল। তখন বিআরআইসিএম জানায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০ জন করোনা আক্রান্তের উপর এই স্প্রে’র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে, স্প্রে যথেষ্ট কার্যকর। স্প্রের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস দ্রুত ধ্বংস হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এটি ব্যবহার করলে সুফল পাবেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভাইরাল লোড কমিয়ে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে এই স্প্রে। ‘বঙ্গসেফ ওরো ন্যাজাল স্প্রে’র পেটেন্টের জন্যও এই মুহূর্তে কাজ করছে বিআরআইসিএম।
[আরও পড়ুন: বাড়ছে সংক্রমণ, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব রাশিয়ার]
এদিকে, ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। এখানকার প্রচুর মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণ ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের জন্য প্রায়শয়ই ভারতে আসেন। এই সংখ্যা বছরে ১৫ লক্ষের কম নয়। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ভারতের সঙ্গে যাতায়াত লাগাম টানা জরুরি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা। তাঁর কথায়, “প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে খুব বেশি যাতায়াত হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অবশ্যই থাকে। আমরা বর্ডারে কড়াকড়ি করতে বলছি। আসাযাওয়া সীমিত করতে হবে। এর অর্থ, একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভারত ভ্রমণ করবেন না। কোনওরকম পর্যটন, বিনোদন বা সাধারণ কারণে যাতায়াত বন্ধ করা যেতে পারে।”