সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয় ঢেউয়ে রোজই নতুন রেকর্ড গড়ছে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) সংক্রমণ। তবে ভোটের বঙ্গে মঙ্গলবার তা ছাপিয়ে গেল সর্বকালীন রেকর্ড। স্বাস্থ্যদপ্তরের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮১৯ জন, প্রাণহানি ৪৬ জনের। ক্রমশই কমছে সুস্থতার হার। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৮০৫। শতকরা হার ৮৯.৮২ শতাংশ। বেশ কয়েকদিন সময় আগেও এই হার ছিল ৯২ শতাংশের বেশি। সংক্রমণের শীর্ষে সেই কলকাতা। এখানে একদিনে সংক্রমিত ২২৩৪জন। এর পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯০২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
নির্বাচনী আবহে বাংলার করোনা পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। রাজনৈতিক সভা, প্রচার চলছেই। কোভিড বিধি মেনে নির্বাচন করার নির্দেশ গোড়াতেই দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কোথায় কী? সভাগুলোয় ভিড় এবং করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকায় নির্বাচন কমিশন আরও কড়া হয়েছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে প্রচারের সময়সীমা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও সমর্থকদের আনাগোনায় লাগাম টেনেছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ৫০০ জনের বেশি জনসমাগম কোনওভাবেই হবে না। এ নিয়ে সতর্ক রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। বামফ্রন্টের তরফে আগেই প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছুতেই যেন সংক্রমণকে বাগে আনা যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: মমতার সভার আগে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ মৌসম নূর, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত নেত্রী ]
এই অবস্থায় সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী জরুরি সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন। জানিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সবরকমভাবে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে আগেরবারের তুলনায় কোভিড বেড বাড়ানো হয়েছে ৪৫ শতাংশ। উত্তীর্ণ, গীতাঞ্জলির মতো স্টেডিয়াম, মুক্তমঞ্চকেও সেফ হোম হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া ১২ টি পুলিশ হাসপাতালেও করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়া কলকাতা পুরসভার তরফেও আলাদা বৈঠক করে করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর]
তবে এত কিছুর মধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা ভ্যাকসিনের অভাব। বহু হাসপাতালেই নেই ভ্যাকসিন। গ্রাহকরা তা নিতে গিয়েও ফিরে আসছেন। টান পড়ছে করোনা পরীক্ষার কিটেও। স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তার মধ্যে ৬.৮৫ শতাংশ রিপোর্ট পজিটিভ। করোনা যুদ্ধে সবচেয়ে এগিয়ে দুই জেলা – ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং।