সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ভোটের (West Bengal Assembly Election) ধাক্কায় এবার উত্তর কলকাতায় (North Kolkata) বুধবার থেকে দু’দিন বন্ধ ৩৬টি ভ্যাকসিন সেন্টার । একইভাবে প্রায় সমসংখ্যক করোনা টেস্টিং সেন্টারও বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে কলকাতা পুরসভা। হয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, নয়তো পোলিং সেন্টারের ১০০ মিটারের মধ্যে থাকায় ওই ভ্যাকসিন সেন্টারগুলি বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার জানালেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুব্রত রায়চৌধুরী। এদিকে টান টেস্ট কিটেও। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শহরবাসীর।
একসঙ্গে এতগুলি টিকাদান কেন্দ্র দু’দিন বন্ধ থাকায় করোনা (Coronavirus) মোকাবিলায় কলকাতার প্রতিরোধ অনেকখানি ধাক্কা খাবে। পাশাপাশি কোভিড শনাক্তকরণও টানা দু’দিন শহরের উত্তরে অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে স্বীকার করেছেন পুর চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল দক্ষিণ কলকাতার চার কেন্দ্রে ভোটের জন্য ২২টি ভ্যাকসিন সেন্টার এবং লালারস সংগ্রহ কেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে হরিদেবপুরের ধারা পাড়ায় পুরসভার হেলথ সেন্টারের দুই চিকিৎসকই এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে ওই সেন্টারও এদিন বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা।
[আরও পড়ুন: ভয়ংকর হচ্ছে করোনার দাপট, অতীত রেকর্ড ভেঙে একদিনে রাজ্যে মৃত ৭৩ জন]
ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চালুর জেরে ধর্মতলায় পুরসভার প্রধান দপ্তরের বড় টিকাদান কেন্দ্রটিও আজ থেকে বন্ধ থাকবে। স্বভাবতই এই কেন্দ্রে এতদিন ধরে পুর কর্মচারী ও সরকারি কর্মীদের যে টিকাদান চলছিল তা দু’দিন হবে না। শুধু তাই নয়, পোলিং সেন্টার তৈরি হওয়ায় বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। যদিও স্বাস্থ্য আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, আগে থাকতে অন্যত্র ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হবে। শহরের যে সেন্টারগুলি চালু থাকবে সেগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ে টিকা পৌঁছে দেওয়া হবে। এদিকে ভ্যাকসিনের পাশাপাশি আকাল টেস্ট কিটেরও। গত কয়েকদিন যাবৎ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে আকাল দেখা দিয়েছিল করোনা ভ্যাকসিনের। এবার করোনা পরীক্ষা করার কিটের জোগানেও টান। মঙ্গলবার ক্যানিং, মগরাহাট, পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতালে ২৫ জনের বেশি রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একই অবস্থা কলকাতারও।
বাঘাযতীনের একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছে, নাম লেখালে তিনদিনের আগে লালারসের নমুনা পরীক্ষা সম্ভব নয়। আরটি-পিসিআর টেস্ট কিটের টানাটানির জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন ব্লক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টেস্ট করা হলেও তার নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লক হাসপাতাল থেকে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টার বেশি টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। আচমকাই বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। মৃত্যুও বেড়েছে আগের তুলনায়। কোনওরকম উপসর্গ দেখা দিলে আতঙ্কিত মানুষ আর ঘরে বসে থাকতে রাজি নয়। কিন্তু টেস্ট কিটের অভাবে জেলার একাধিক হাসপাতালে করোনা পরীক্ষায় গতি আসছে না।