বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রাজ্যে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। যা সরকারের বিপক্ষে যাচ্ছে। অথচ মানুষকে সংগঠিত করে জনমানসে ছাপ ফেলার মতো আন্দোলন গড়ে তোলা যাচ্ছে না কেন? বৃহস্পতিবার বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে সিপিএম পলিটব্যুরোয় এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে সূত্রের খবর। পার্টি কেন ‘জঙ্গি আন্দোলন’ থেকে সরে আসছে তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে।
সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কেরল সিপিএমকেও। রাজ্যে প্রধান প্রতিপক্ষ হতেই পারে, কিন্তু কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা চলাকালীন যেভাবে কেন প্রতি পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হলো কেরল সিপিএমকে। সর্বভারতীয় রাজনীতির কথা ভেবে আপাতত পার্টির নরম মনোভাব নিয়ে চলার প্রয়োজন বলে মালয়ালি নেতাদের স্পষ্ট জানালেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri)। সমালোচনার মুখে পড়ে ছাত্র সংগঠনের ওপর দায় চাপিয়ে পিনারাই বিজয়নরা দায়িত্ব সেরেছেন বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কেন মোদিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন না পুতিন?]
বিজেপি (BJP) বিরোধিতা ও রাজ্যে সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রশ্নে পলিটব্যুরোর বৈঠকে বঙ্গ সিপিএমের (CPIM) নেতাদের কার্যত মুখ ঝামটা খেতে হলো। সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ, পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, সরকারি দলের একের পর নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও পার্টি নেতৃত্ব বিবৃতি নির্ভর রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ। আবার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপিকে প্রধান শত্রু চিহ্নিত করা হলেও অনেক সময় বঙ্গ পার্টির বক্তব্য ও অবস্থান হুবহু গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। বিজেপি বিরোধিতার বার্তা সাধারণ মানুষর কাছে পৌঁছে দিতে বিকল্প চিন্তাভাবনা ও আন্দোলনের পথ খুঁজতে হবে বলে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে একেজি ভবন সূত্রের খবর। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির তুলনায় অধিক সংখ্যক প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরিরা।
[আরও পড়ুন: আমেরিকার আবিষ্কর্তা কলম্বাস ছিলেন নৃশংস, অত্যাচারী! এই ঘৃণ্য ইতিহাস জানেন?]
অন্যদিকে, কেরলে দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর নেতৃত্বের চালচলনে পরিবর্তন হচ্ছে। সেইসঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণোর অভিযোগও পার্টির কাছে জমা পড়েছে। বিজেপি এই সুযোগকে কাজে লাগাতে ময়দানে নামার পরিকল্পনা করছে। সেইজন্য প্রকাশ জাভড়েকরের মতো অভিজ্ঞ নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে কেরলে পাঠিয়েছে। মালয়ালি রাজ্যে পার্টি ও সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। সেখানও বিজেপি বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়। দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধিতায় সমস্থ গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি একজোট হয়ে লড়াইয়ের পক্ষে বৈঠকে সওয়াল করেন ইয়েচুরি। তাই কংগ্রেসের (Congress) মতো বিজেপি বিরোধী দল কোনও কর্মসূচি নিলে চরম বিরোধিতার পথে হাঁটলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে। তাই রাজ্যের ক্ষেত্রেও কংগ্রেসের প্রতি নরম মনোভাব নিয়ে চলতে হবে বলে মালয়ালি নেতাদের মনে করিয়ে দেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক।