বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: করোনায় (Covid-19) নাজেহাল দেশের সাধারণ মানুষ। অর্থনীতির গ্রাফ অনেক নিচে, অভুক্ত থেকেই দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। কেউ আবার এই পরিস্থিতিতে চাকরি হারিয়েছেন। তার উপর রয়েছে সংক্রমণের ভয়। এই অবস্থায় বিপন্ন সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন CPM পলিটবুরোর সদস্য বিমান বসু (Biman Basu)। করোনার ভয়ে ঘরে বসে নয়, সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে দলের একাংশে কর্মীদের রাস্তায় নামতে বললেন।
শনিবার পার্টির ১০০ বছর পূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রবীণ এই বামনেতা বলেন, ‘‘গত ১০০ বছরে সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মানুষ। মানুষের জীবনে দুই সরকার নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তাতে সাধারণ মানুষের বিপদ কমার বদলে বাড়ছে। মানুষের এহেন সমস্যায় বামপন্থীরা কখনই নিজেদের গুটিয়ে রাখেনি। কিন্তু এখন পার্টির মধ্যে এক অদ্ভুত সমস্যা তৈরি হয়েছে। কোভিডকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করে পার্টির অনেক নেতা–কর্মীই নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন। ঘরবন্দি করেছেন। এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। রাস্তায় নেমে মানুষের সেবা করতে হবে।’’ এর সঙ্গেই যোগ করেন, “নিষ্ক্রিয় কর্মী থাকার থেকে না থাকা ভাল। অনেকেই মাসের পর মাস বাড়িতে বসে রয়েছেন।” এদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে পার্টি যে কড়া অবস্থান নেবে তারও ইঙ্গিত দেন বিমান বসু।
[আরও পড়ুন: চাকরির টোপ দিয়ে টাকা আদায়ের পর অপহরণের ছক, পুলিশের জালে মূল চক্রী দম্পতি]
এদিকে, আবার নিজের বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri)। কেন্দ্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্যগুলির ক্ষমতা খর্ব করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া পার্টির বর্তমান অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মুখ না খুললেও সংকটের কথা স্বীকার করেও নেন। মানুষের ঐক্য ভাঙতে কেন্দ্রের সরকার ব্রিটিশ মডেল অনুসরণ করছে বলে অভিযোগ সীতারামের।
তিনি বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বা মানুষের ঐক্যকে ভেঙে দিয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করেছে মোদি সরকার। যা ব্রিটিশ সরকার করেছিল।’’ বামপন্থীদের এই ঐক্য ধরে রাখার কাজে আরও শক্তি নিয়োগ করতে হবে বলে পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করতে সংবিধানের যৌথ তালিকায় থাকা কৃষি বা শিক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এরফলে কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। রাজ্যগুলিকে ‘গ্লোরিফায়েড মিউনিসিপ্যালিটি’ বানানোর চেষ্ঠা চলছে বলেও মনে করেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক।