রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: হোল টাইমার বা সর্বক্ষণের কর্মীরাই এবার শুধু থাকতে পারবেন পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে। চাকরিজীবী বা অন্য পেশায় রয়েছেন এরকম কোনও নেতা জেলা পার্টির এই শীর্ষপদে জায়গা পাবেন না। কঠোর সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন (Alimuddin Street)। জেলা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব যাতে পার্টির কাজেই সর্বক্ষণ মনোনিবেশ করতে পারে সেদিকে বিবেচনা করেই মূলত সিপিএম এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর এই নয়া বিধিতে বাদ পড়তে পারেন জেলার তাবড় নেতারা।
সিপিএম (CPM) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) জানালেন, “নিজের জন্য নয়, মানুষের জন্য রাজনীতি। আমরা এই মনোভাব নিয়েই চলি। মানুষকে গুরুত্ব দিতে হবে।” সিপিএমেরা কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘পার্টির কাজটা সর্বক্ষণের। দশটা-পাঁচটা ডিউটি নয়।’’
[আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের বিক্ষোভে মাথা নোয়াচ্ছে না কলকাতা ও সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, অফলাইনেই পরীক্ষার ভাবনা]
সম্প্রতি সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে সেই নির্দেশ জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, এতদিন শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্য পেশার সঙ্গে যুক্তরাও পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে থাকতেন। সেই নেতা ২৪ ঘণ্টা পার্টির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারতেন না। আগামীদিনে পার্টিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে জেলার শীর্ষনেতৃত্ব যাতে সবসময় সংগঠনের কাজে থাকতে পারে সেটা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হুগলির রূপচাঁদ পাল ছিলেন কলেজের অধ্যাপক। সাংসদ থাকাকালীন তিনি হুগলি জেলা পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
প্রাক্তন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরিও অধ্যাপক ছিলেন। তিনিও হুগলি জেলা পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। আবার হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন কনক দাস। তিনি বামনগাছির একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। হাওড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন কৃষ্ণস্বপন মিত্র, ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। এই নতুন নির্দেশ মেনেই হোলটাইমার নন বলে কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীতে রাখা হয়নি দেবাঞ্জন চক্রবর্তী ও রাহুল ভট্টাচার্যকে। তাঁদের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। তবে হোলটাইমার না থাকা সত্ত্বেও আবার কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন দেবেশ দাস ও ফৈয়াজ আহমেদ খান।
[আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে সর্বস্ব লুট! রায়গঞ্জে প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস]
সংখ্যালঘু ও তফসিলি কোটাতেই তাঁদের রাখা হয়েছে বলে পার্টি সূত্রে খবর। এখন প্রশ্ন, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী গঠনের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেয় পার্টি? কারণ, দলীয় কোন্দলের জেরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পার্টির সম্পাদক নির্বাচন করতে হয়েছিল আলিমুদ্দিনে ডেকে। এবার হোলটাইমার বিধিতে তন্ময় ভট্টাচার্য কিংবা বাবলু করের মতো উত্তর ২৪ পরগনার নেতারা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে বহু জেলা এই হোলটাইমার বিধি মানতে গিয়ে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়তে হচ্ছে অনেক নেতাকে। তা নিয়ে পার্টির অন্দরে ক্ষোভ প্রকাশও করছেন বাদ পড়া নেতারা।