স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষা দুর্নীতিতে দুই নেতাকে বহিষ্কার করছে সিপিএম (CPM)। কলেজের পরিচালন সমিতির মাথায় বসে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ ওঠে টালিগঞ্জ ১ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বেহালা পূর্বের পার্টি সদস্য তথা সাক্ষরতা আন্দোলনের নেতা পার্থ দাসের বিরুদ্ধে। দু’জনকেই ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল আলিমুদ্দিন (Alimuddin)। এবার ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পার্টি সূত্রে খবর, বুধবার সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থক দাসকে বহিষ্কারের (Sack) সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে। অর্থাৎ, শিক্ষাক্ষেত্রে যুক্ত থাকাকালীন তাদের নেতারাও যে দুর্নীতি করেছেন, তা মেনে নিল সিপিএম।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে রোজ গলা ফাটাচ্ছেন সিপিএম নেতারা। তখন তাদেরই দুই নেতার নাম শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে পড়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছিল আলিমুদ্দিন। কলেজ সংক্রান্ত শিক্ষা দুর্নীতিতে এবার সিপিএমকে নিশানা করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। তৃণমূলের প্রশ্ন, শিক্ষা দুর্নীতিতে যে সিপিএম নেতারাও যুক্ত তাহলে নিজেদের হয়ে সাফাই দেন কেন মহম্মদ সেলিমরা (Md Selim)? তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিজেপির বি-টিম হয়ে যে দল শূন্য হয়েছে, নিজেদের লোককেই শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে বহিষ্কার করতে হয়েছে, সেই সিপিএমের মুখে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির কথা মানায় না।
[আরও পড়ুন: সেনার অনুষ্ঠানের মঞ্চে হোঁচট, বক্তৃতা সেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন বাইডেন, ভাইরাল ভিডিও]
জানা গিয়েছে, টালিগঞ্জে ক্যালকাটা ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট কলেজের পরিচালন সমিতির মাথায় বসেই দুই নেতা গৌতম ও পার্থ আর্থিক অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। টাকা নয়ছয়ের (Fraud) ব্যাপারে অভিযোগ জমা পড়েছিল সিপিএম রাজ্য কমিটিতে। তদন্ত করে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য ও রাজ্য কমিটির সদস্য মেঘলাল শেঠকে নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। সেই কমিশন রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলী অভিযুক্তদের ছ’মাস সাসপেন্ড করেছিল।
[আরও পড়ুন: ৩০ সেকেন্ডেই উধাও হবে হাইপারটেনশন! সুস্থ থাকার টিপস দিচ্ছেন মালাইকা]
কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট ব্যাখ্যা করেছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। অভিযোগ নিয়ে দুই নেতা নিজেদের পক্ষে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে খবর। সূত্রের খবর, বুধবার সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতিতে কলকাতা জেলা পার্টির সম্পাদমণ্ডলীতে দুই নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে। কিন্তু জেলা পার্টির কয়েকজন এখনও বহিষ্কারের বিপক্ষে। যে কারণে পার্টির তরফে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হয়নি। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে টালিগঞ্জ (Tollygaunge) এলাকায় এরিয়া কমিটির সম্মেলন হয়েছিল। কিছু পার্টি সদস্য তখন আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন।
সম্মেলনের ভোটাভুটিতে নিজেদের গোষ্ঠীর জয়কে নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পার্টি সদস্যকে নাকি টাকা দেওয়া হয়েছিল। পার্টি ক্ষমতায় নেই, কিন্তু এভাবে সম্মেলনের ভোটাভুটিতে কমিটি দখলের জন্য টাকা খরচ নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে।