রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া আলিমুদ্দিন। তরুণ প্রজন্মকে বুথে পেতে লোকসভা ভোটের আগে ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি করেছে বঙ্গ সিপিএম (CPM)। পার্টির নির্দেশ, ৩১ বছরের কম বয়সিদের যত বেশি সম্ভব পার্টির সদস্যপদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গত ৭ জানুয়ারি যুবদের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে জনসমাগম দেখে তরুণ প্রজন্মকেও পার্টি সদস্যের (Party Member) অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে চায় আলিমুদ্দিন।
পক্ককেশ নয়, শাখাস্তরে তরুণ প্রজন্মকে (Young Generation) গুরুদায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি পার্টি চিঠির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তরুণদের পার্টি সদস্য করার ক্ষেত্রে যত্ন ও পরিচর্যা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে দুর্বলতা ও ঘাটতি অবিলম্বে কাটাতে হবে। হারানো ভোট ফিরে পেতে আলিমুদ্দিনের ভরসা যে দলের নবীনরা, তা স্পষ্ট হয়েছে ৭ জানুয়ারি DYFI-এর ব্রিগেড সমাবেশ। ‘লাল ঝান্ডা’র ব্যাটন বদলের বার্তা উঠে এসেছে সেদিনই। মঞ্চ ছেড়ে সামনে ডি জোনে দর্শকাসনের প্রথম সারিতে ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র থেকে সুজন চক্রবর্তীরা। আর মঞ্চে তাঁরা এগিয়ে দিয়েছিলেন এই প্রজন্মের মীনাক্ষী, হিমগ্নরাজ, ধ্রুবজ্যোতি, কলতান, প্রতীকুর, সৃজনদের। তরুণ-ব্রিগেডের পরিচালনাতেই সেদিন হয়েছে ব্রিগেডের (Brigade) সভা।
[আরও পড়ুন: ক্রমশ দেশজুড়ে দাপট বাড়ছে করোনার, বাংলায় JN.1 আক্রান্ত ৯৬]
বেশ কিছুদিন পর বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে এই পালাবদলের আবেশেই ‘বৃদ্ধতন্ত্রে’র প্রতীকী অবসান আর নয়া প্রজন্মের উত্থানের আভাস দেখছে রাজনৈতিক মহলও। রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ক্রমশ শক্তিক্ষয় হয়েছে সিপিএম তথা বামেদের (Left Front)। এগারোর পর একের পর এক নির্বাচনে তৃণমূল যখন তাদের ভোট বাড়িয়ে একক আধিপত্য বজায় রেখেছে তখন ভোট কমেছে সিপিএমের। গত একুশের ভোটে সিপিএমের বহু ভোট বিজেপির (BJP) ঝুলিতে চলে গিয়েছিল। পার্টির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে অধিকাংশ বুথেই কর্মীর অভাব, লোকবল নেই। প্রবীণরা ভিড় করেন পার্টি অফিসে।
[আরও পড়ুন: বিদ্যুতের বিল বাঁচাতে অভিনব চুরি! কায়দা জানলে চমকে যাবেন]
লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে বুথের টিমকেই শক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে দলের ছাত্র-যুবদের। বুথ সংগঠন সম্পর্কে সঠিক উপলব্ধির গুরুতর ঘাটতি রয়েছে বলে পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে। তাই শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক নয়, ৩৬৫ দিন বুথ সংগঠন গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুথস্তরে জনগণের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ, পার্টির রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রচার, স্থানীয় দাবিকে চিহ্নিত করা ও তার ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোলা, বুথ এজেন্ট থেকে পোলিং এজেন্ট, এসব কাজেই নবীন ব্রিগেডকে দায়িত্ব দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন। ফলে এলাকায়, মহল্লায়, নয়া প্রজন্মকেই এবার সামনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, মীনাক্ষী-সৃজনদের মতো নবীন প্রজন্মকে এগিয়ে দিয়ে মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরা থাকবেন মেন্টরের ভূমিকায়।