দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: ফের কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রাণ গেল মৎস্যজীবীর। গভীর জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেল বাঘ। রবিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে বসিরহাট রেঞ্জ অফিসের ঝিলার জঙ্গলে।এই খবর লেখা পর্যন্ত দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফ থেকে। চলছে তল্লাশি। তল্লাশিতে অংশগ্রহণ করেছে স্থানীয় কুমিরমারী গ্রামের মানুষরা।
পেটের দায়ে বড় দায়। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে তাই ছুটতে হয় কাঁকড়া ধরতে। আর এই কাজ করতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ গিয়েছে বহু মৎস্যজীবীর। এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল কুমিরমারী গ্রামের মৎস্যজীবী অরবিন্দ বিশ্বাসের নামও।
[আরও পড়ুন: জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনে ছাড়ের মেয়াদ আরও বাড়ল, স্বস্তি দিয়ে বড় ঘোষণা রাজ্যের]
রবিবার ভোর থাকতেই নৌকা চেপে ঝিলার তিন নম্বর জঙ্গলে গিয়েছিলেন কুমিরমারী বাসিন্দা অরবিন্দ বিশ্বাস। সঙ্গী ছিলেন আরও দুজন। সেখানে নৌকা থেকে নামতেই অরবিন্দের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। টেনে নিয়ে যায় গভীর জঙ্গলে। কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসেন সঙ্গী দুজন। বাঘের মুখ থেকে দেহ ছিনিয়ে আনার সাহস হয়নি তাঁদের। তবে ফিরে এসেই নিকটবর্তী রেঞ্জ অফিসে খবর দেন তাঁরা। রেঞ্জ অফিসের আধিকারিকরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। চলছে তল্লাশি। এখনও দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
জানা গিয়েছে, অরবিন্দের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে গোটা পরিবার। কাঁকড়া ধরতে যাওয়ায় অরবিন্দের কাছে কোনও সরকারি পরিচয়পত্র ছিল না।
[আরও পড়ুন: ন’বছর পর রেকর্ড ঠান্ডা জানুয়ারিতে, কবে বিদায় নেবে হাড় কাঁপানো শীত?]
ইতিপূর্বে এই অঞ্চলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের শিকার হয়েছেন একাধিক মৎস্যজীবী। অনেকে আবার প্রাণপণে লড়াই করে জীবন বাঁচিয়ে ফিরে এসেছে। যেমন ৩০ অক্টোবর পাথরপ্রতিমার সত্যদাসপুর সবুজবাজার থেকে মোট ছ’জন কাঁকড়া ধরতে যায় চুলকাঠি জঙ্গলের বিজয়াড়া চরে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুবল মল্লিক, তাঁর স্ত্রী কাজল মল্লিক, ভারতী মল্লিক, অবিনাশ নায়েক, সরস্বতী ভক্তা, শম্ভু নায়েক। পরিকল্পনা মোতাবেক খাঁড়িতে কাঁকড়াও ধরেন তারা। রবিবার রাতে নৌকোয় ছিলেন ওই ছ’জন। নৌকোর উপর ছাউনিও দেওয়া ছিল। আচমকা ছাউনির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দক্ষিণরায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে কাঁকড়া ধরার লাঠি, শাবল দিয়ে বাঘকে পালটা আক্রমণ করে মৎস্যজীবী অবিনাশ। লাগাতার আক্রমণের জেরে চম্পট দেয় বাঘ।