সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমে চওড়া হচ্ছে তালিবান-পাকিস্তান সম্পর্কের ফাটল। মূলত, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) জঙ্গিগোষ্ঠীর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আফগান তালিবানের উপর ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের মাটিতে লাগাতার নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে টিটিপি। কিন্তু ইমরান সরকারের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সংগঠনটির উপর রাশ টানতে গড়িমসি করছে মুল্লা আখুন্দজাদার সংগঠন।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন হামলার জের, নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় দু’দশকের সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে রাশিয়া]
সম্প্রতি এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে তালিবান শাসন কায়েম হওয়ার পর থেকেই অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন জেহাদি সংগঠনগুলি। বিশেষ করে পাকিস্তানে একাধিক হামলা চালিয়েছে, টিটিপি। বারবার আলোচনায় বসেও সংগঠনটিকে অস্ত্র পরিহারে বাধ্য করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আফগান তালিবানের কাছে দরবার করেও বিশেষ ফল পায়নি ইসলামাবাদ। মোল্লা আখুন্দজাদার সংগঠন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, টিটিপি সমস্যার সমাধান নিজেই করতে হবে পাকিস্তানকে। আর এতেই খাপ্পা ইসলামাবাদ। শুধু তাই নয়, ইসলামাবাদে সদ্য সমাপ্ত ইসলামিক দেশগুলির (OIC) বৈঠকে আফগান বিদেশমন্ত্রকের এক আমলাকে পাঠিয়ে দায় সারে তালিবান।
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, তালিবান আমলে সীমান্ত সমস্যা নিয়েও ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। কয়েকদিন আগেই পাক-আফগান সীমান্তে পাকিস্তানি ফৌজের দেওয়া বেড়া উপড়ে ফেলে তাদের গুলি করার হুমকি দেয় তালিবান জঙ্গিরা। ডুরান্ড লাইনে ঘটা এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানায় ইসলামাবাদ। আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করেছে পাকিস্তান। আর অতীতকাল থেকেই সেই সীমান্ত নিয়ে সংঘাত চলছে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে। ১৯৪৭ সাল থেকে কোনও আফগান সরকার ডুরান্ড লাইনকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাক নীতিনির্ধারকরা মনে করছিলেন তালিবান ক্ষমতায় এলে তারা সেই স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে জেহাদিরা।
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে মরিয়া তালিবান। একইসঙ্গে বিদেশি অর্থসাহায্য পেতে জঙ্গি কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে হবে সংগঠনটিকে। তাই আপাতত পাকিস্তানের জেহাদি এজেন্ডার সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে তালিবান। পাশাপাশি, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাক বিরোধী তালিবান গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে চরম ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ। সবমিলিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে খারাপ হচ্ছে।