অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: ভারতীয় টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। আর তারপরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ল বাংলার উইকেটকিপারের ‘দেশের বাড়ি’ শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। রবিবার বিক্ষোভে শামিল শিলিগুড়ির ইয়ুথ ক্লাব।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য শনিবারই ভারতীয় দল (Team India) ঘোষণা করেছেন নির্বাচকরা। দেখা গিয়েছে, ফের ঋদ্ধিমানের পরিবর্তে পছন্দের তালিকায় ঋষভ পন্থই রয়েছেন। যার পর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ঋদ্ধিমান। একহাত নিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়কেও। বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় শিলিগুড়িতেও (Siliguri)। এদিন ক্লাবের সদস্যরা প্ল্যাকার্ড হাতে প্রথমে মৌন প্রতিবাদ দেখান। অবিলম্বে ঋদ্ধিমানকে টেস্ট দলে ফেরানোর দাবিতে সরব হন তাঁরা। পাশাপাশি শিলিগুড়ি ক্রিকেট লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনও প্রতিবাদ দেখায়। ইয়ুথ ক্লাবের সদস্যরা প্ল্যাকার্ডে ঋদ্ধির সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানান। লেখা হয়, ঋদ্ধিমান আর টেস্ট দল সমার্থক। ঋদ্ধিকে বাদ দেওয়া মানে তাঁকে ও এই শহরকে অপমান করা।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে হার, প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, টুইটে শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর]
ঋদ্ধিমান সাহা বাদ পড়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন বর্ষীয়ান বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। এ বিষয়ে তিনি বিসিসিআইকে চিঠি লিখবেন বলেও জানান। একই সুর শিলিগুড়ির ভাবি মেয়র গৌতম দেবের গলাতেও। তাঁর কথায়, “আমার মনে হয় নির্বাচকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। ঋদ্ধিমানের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ওঁর বিশ্বরেকর্ড আছে। তারপরও ওঁর প্রতি এই বঞ্চনা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না।”
শিলিগুড়ির অগ্রগামী সংঘে ক্রিকেট শিখে বড় হয়েছেন ঋদ্ধিমান (Wriddhiman Saha)। শিলিগুড়িতে পাপালি নামেই পরিচিত তিনি। এই ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে অনুশীলন করেই প্রথমে রনজি ট্রফি তারপর ভারতীয় দলে জায়গা করে নেন তিনি। তাঁকে দেখেই শিলিগুড়িতে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ বাড়ে উঠতি ক্রিকেটারদের। এমনকী ঋদ্ধির থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে পরবর্তীতে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেন শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা ঘোষও। কিন্তু হঠাৎ করে একপ্রকার জোর করে ঋদ্ধিমানকে ভারতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ায় মন খারাপ শিলিগুড়িবাসীর। তাঁরা জাতীয় নির্বাচন মণ্ডলীর এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন।
বোর্ডের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি রাজকুমার সাহা বলেন, “আমরা চাই দ্রুত পাপালিকে দলে ফেরানো হোক। ওঁকে বাদ দেওয়া মানে গোটা শিলিগুড়ির অপমান। এভাবে কাউকে দল থেকে বের করে দেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।” ক্লাব সম্পাদক সঞ্জীব মাইতির কথায়, “পারফরম্যান্স সবসময় সবার এক থাকে না। গ্রাফ ওঠা নামা করেই থাকে। যে ঋদ্ধি ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলে টেস্ট বাঁচাতে পারেন, এভাবে বের করে দেওয়া তাঁরও অপমান। ওঁর তিনটি শতরান আছে, ওঁর প্রশংসা স্বয়ং অ্যাডাম গিলক্রিস্ট করেছেন। ঋদ্ধির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই বোকামি। আমরা ঋদ্ধির পাশে রয়েছি। ভারতীয় দলে উইকেটের পিছনে দস্তানা হাতে ঋদ্ধিকেই আবার আমরা দেখতে চাই।”