সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র তিন মাসেই ভারতীয় ক্রিকেটের অবিসংবাদী রাজা থেকে মুকুটহীন সম্রাটে পরিণত হলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। টি-২০ অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন নিজে, ওয়ানডে থেকে সরানো হয়েছিল, টেস্টের নেতৃত্বও নিজে থেকেই ছাড়লেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘কিং’। কিন্তু বিরাটের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ক্রিকেট রাজনীতির কুটিল খেলা দেখছেন তাঁর অনুগামীদে একাংশ। অনেকে মনে করছেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) এবং জয় শাহর নেতৃত্বাধীন বোর্ডের চাপের মুখেই রণে ভঙ্গ দিতে হল বিরাটকে।
সম্ভবত সেকারণেই কোহলি অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই নেটদুনিয়ায় সৌরভ তথা বিসিসিআইকে (BCCI) আক্রমণ শুরু করেছেন কেউ কেউ। নেটিজেনদের কেউ বলছেন, ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হলেন বিরাট। আবার কেউ বলছেন,সৌরভদের উদ্দেশ্য পূরণ হল। কারও মতে, বোর্ডের প্রভাবশালীদের চাপে সরে যেতে হল কোহলিকে। অনেকের ধারণা ওয়ানডে অধিনায়কত্ব যাওয়া নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে যে বিবাদে জড়িয়েছিলেন, সেটাই শেষ পর্যন্ত সিংহাসনচ্যুত করল কোহলিকে।
[আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন, ২০ ঘণ্টা আগে ড্রেসিং রুমেই দলকে জানিয়েছিলেন কোহলি]
এসবের মাঝে অবশ্য বিরাটকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন বহু মানুষ। কোহলি অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর যে বোর্ড সচিব জয় শাহকে নেটদুনিয়ায় আক্রমণ করা হচ্ছে, সেই জয় শাহ (Jai Shah) নিজেও বিদায়ী অধিনায়ককে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন। তিনি বলছেন,”বিরাটের অধিনায়কত্বে দেশে এবং বিদেশে দারুণ খেলেছে ভারতীয় দল (Indian Team)। অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডে টেস্ট জয় অবশ্যই আলাদা আনন্দের। ও গোটা দলকে প্রচণ্ড ফিট করে তুলেছে।” বিসিসিআইয়ের সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলে অধিনায়ক কোহলির টেস্ট রেকর্ড তুলে ধরে লেখা হয়েছে,”অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট দলকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিরাট কোহলিকে ধন্যবাদ।” বিরাটের অত্যন্ত কাছের মানুষ রবি শাস্ত্রী লিখেছেন,”বিরাট তুমি মাথা উঁচু করে বিদায় নিতে পারো। খুব কম অধিনায়ক তোমার মতো সাফল্য পেয়েছে। ভারতের সব চেয়ে আক্রমণাত্মক এবং সফল অধিনায়ক তুমি।” বিরাটদের প্রাক্তন সতীর্থ থেকে শুরু করে বহু প্রাক্তন ক্রিকেটার তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছাবার্তা এসেছে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) মতো রাজনীতিবিদের কাছ থেকেও।
[আরও পড়ুন: অভিমান! সীমিত ওভারের পর এবার টেস্টেও অধিনায়কত্ব ছাড়লেন কোহলি]
বিরাট পর্বকে অতীত ধরে নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের নতুন অধিনায়ক কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট মহলে। এতদিন বিরাটের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করতেন রাহানে। কিন্তু তাঁর এখন দলে জায়গা পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে। জোহানেসবার্গ টেস্টে বিরাটের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করেছেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। তবে, সেই টেস্টে খেলেননি সীমিত ওভারের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও (Rohit Sharma)। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সীমিত ওভারের অধিনায়ক রোহিতই। সেক্ষেত্রে তিন ফরম্যাটেই একজন অধিনায়ক পাবে ভারত। ২২ বছর পর ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাটন পুরোপুরি চলে যাবে এক মুম্বইকরের হাতে। তবে, এর বিরুদ্ধমতও আছে। অনেকে মনে করছেন, রোহিত টেস্ট ক্রিকেটে থিতু হলেন বছর খানেক আগেই। তাছাড়া তাঁর বয়সটাও ৩৪। সেক্ষেত্রে অন্য কারও কথা ভাবা হতে পারে। সেটা যদি হয়, তাহলে লোকেশ রাহুল বা রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravi Ashwin) লড়াইয়ে থাকতে পারেন।