সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ মুহূর্তে দলে ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি ঈশান কিষানের। যিনি প্রায় দু'বছর দলের বাইরে। রিঙ্কু সিং যাকে কিনা কোনও কারণ ছাড়াই দলের বাইরে রাখা হয়েছিল, তাঁকে আবার বিশ্বকাপের দলে ঢুকিয়ে দেওয়া হল? জিতেশ শর্মা আহামরি কিছু করেননি ঠিকই আবার কোনও অন্যায় বা ভুলও করেননি, তাঁকেও বাদ দেওয়া হল। সব মিলিয়ে ভারতের বিশ্বকাপের দল নির্বাচন ঘিরে একাধিক রয়ে গিয়েছে।
যে কোনও দল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে অন্তত ৬ মাস থেকে ১ বছর আগে। বিশ্বকাপে কী ধরনের দল হতে পারে, বা দলের কম্বিনেশন কী হতে পারে, কী ধরনের ক্রিকেট খেলবে দল, আগে থেকে ঠিক করে নিয়ে সেইমতো ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়া হয়। ক্রিকেটীয় ভাষায় যেটাকে দলের 'টেমপ্লেট' বলা হয়। যে কোনও সফল দলই নির্দিষ্ট টেমপ্লেট অনুসরণ করে, যেমনটা ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে করেছিল রোহিত শর্মার ভারত। কিন্তু গম্ভীর জমানায় সেই টেমপ্লেট নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে। এখনও চলছে। সেই পরীক্ষানিরীক্ষার পরিমাণ এতটাই যে বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগের দিন পর্যন্ত ভারতীয় দলের ওপেনার এবং ফিনিশারের ভূমিকায় কারা খেলবেন সেটা নিশ্চিত নয়।
২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপের পর অভিষেক শর্মা এবং সঞ্জু স্যামসনকে ওপেনার হিসাবে খেলিয়ে, তিলক বর্মা, সূর্যকুমার যাদব এবং রিঙ্কু সিংদের দিয়ে মিডল অর্ডার সাজিয়ে দিব্যি সাফল্য পাচ্ছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপের মাস ছ'য়েক আগের এশিয়া কাপে রাতারাতি সেই কম্বিনেশন বদলে দেওয়া হল। শুধু শুভমান গিলকে ওপেন করানোর জন্য বাদ পড়তে হল সঞ্জু স্যামসন, রিঙ্কু সিংকে। বদলে ফিনিশার উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় এলেন জিতেশ শর্মা। গিলকে বানানো হল সহ-অধিনায়ক। তিনি যে এই টি-২০ দলে ফিট করেন না, সেটা বারবার প্রমাণিত হওয়ার পরও শুধু তাঁকে কোচ আগামীর নেতা হিসাবে দেখেন বলে, একপ্রকার জোর করে গোটা দলের কম্বিনেশন ভাঙা হল।
মজার কথা হল, এত চেষ্টার পরও সফল হলেন না ভারতীয় ক্রিকেটের 'প্রিন্স'। শেষে বাধ্য হয়ে পুরনো কম্বিনেশনে ফিরতে হল গম্ভীরদের। আগের মতো উইকেটরক্ষক ওপেনার এবং রিঙ্কুর মতো স্বীকৃত ফিনিশার নিয়ে বিশ্বকাপে যাচ্ছে ভারত। অর্থাৎ পুরনো টেমপ্লেটে ফিরতে হল টিম ইন্ডিয়াকে। কিন্তু গম্ভীরের একগুঁয়েমিতে যেটা হল, সেটার ফলে দীর্ঘদিন ম্যাচ প্র্যাকটিস পেলেন না সঞ্জু, রিঙ্কুরা। ঈশান কিষানকে দু'বছর পর মাত্র একটা সিরিজ খেলেই ঢুকে যেতে হবে বিশ্বকাপের দলে। এতে দলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে অসুবিধা হবে না তো রিঙ্কু, সঞ্জু, ঈশান কিষানদের? সে যা-ই হোক, দেরিতে হলেও বোধোদয় হয়েছে ম্যানেজমেন্টের। পরীক্ষিত ফর্মুলায় ফিরেছে টিম। এখন আশা দলে সমন্বয়ের সমস্যা যেন না হয়।
