shono
Advertisement
Mohammed Shami

জীবনের অন্যতম সেরা দিন! মায়ের সামনে ট্রফি জিতে স্বপ্নপূরণ শামির

অবশেষে শামির ক্যাবিনেটে ঢুকল আইসিসি ট্রফি।
Published By: Arpan DasPosted: 01:15 PM Mar 11, 2025Updated: 01:15 PM Mar 11, 2025

আলাপন সাহা, দুবাই: স্থানীয় রাত বারোটার সময়ও ভারতীয় টিম হোটেলের বাইরে বেশ ভিড়। সমর্থকরা আকুল হয়ে অপেক্ষা করে রয়েছেন যদি ক্রিকেটারদের সঙ্গে একটু দেখা করা যায়। হোটেলের লবিতেও ভিড়টা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। টিম বাস অবশ্য তার অনেক আগেই হোটেলে চলে এসেছিল। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের বরণ করার জন্য হোটেলে বিশেষ ব্যবস্থাও হয়েছিল। অবশ্য হোটেলে খুব বেশি উৎসব হয়নি। যাবতীয় সব সেলিব্রেশন মাঠেই করেন ক্রিকেটাররা। জেতার পর ড্রেসিংরুমে বিশাল একটা কেক নিয়ে আসা হয়। যা কাটলেন বিরাটরা। অন্য সময় হলে হয়তো হোটেলেও মাঝরাত পর্যন্ত উৎসব চলত। কিন্তু টিমের বেশিরভাগ ক্রিকেটার সোমবার দেশে ফিরছেন। কারও ফ্লাইট ছিল ভোরে। কারও আবার দুপুরে। গৌতম গম্ভীর দুপুরেই ফ্লাইটে ফিরছেন। তাই ছোটখাটো একটা উৎসব হল। তারপর যে যার মতো নিজেদের ঘরে চলে যান।

Advertisement

রবিবারের রাত ভারতীয় ক্রিকেটে আরও এক স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থেকে যাবে। বারো বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারত। ২০১৭-র ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছিল। সেই আক্ষেপ সব মিলেমিশে একাকার। দুবাইয়ে আরও একটা শাপমুক্তি ঘটল। চার বছর আগে এখানেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ একরাশ যন্ত্রণা উপহার দিয়েছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে হার। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়। সেই দুবাইয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়। গালারি জুড়ে যেমন উৎসব চলছিল, তেমন সেলিব্রেশন চলছিল ক্রিকেটারদেরও। ফাইনালের জন্য বেশিরভাগ ক্রিকেটারের পরিবার চলে এসেছিল। রোহিত চ্যাম্পিয়নের মেডেলটা মেয়ের গলায় পরিয়ে দিলেন। মহম্মদ শামির আবার মা এসেছিলেন। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালের সময়ও শামির ইচ্ছে ছিল মাকে নিয়ে আসার। কিন্তু তার আগে মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ হল শামিরও। মা এলেন। তাঁর সামনেই ট্রফি জিতলেন ভারতীয় পেসার। ক্রিকেট জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন শামি। কিন্তু একটা আফসোস রয়েই যাচ্ছিল। আইসিসি ট্রফি ছিল না তাঁর ক্যাবিনেটে। ২০১৫ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে হার। ২০১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালেও তাই। ২০২৩ বিশ্বকাপটা শামির কাছে আরও কষ্টের। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুরন্ত পারফর্ম করেও ট্রফি জয়ের স্বাদ পাননি। তারপরই চোট-সমস্যা। ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলেও শামি ছিলেন না। সেই আক্ষেপ অবশেষে মিটল। সামির ঘনিষ্ঠ মহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ভারতীয় পেসার বলেছেন, জীবনের অন্যতম সেরা দিন তাঁর। অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল মায়ের সামনে দেশের হয়ে ফাইনাল খেলার। ট্রফি জেতার। সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে। শামির ঘনিষ্ঠ একজন বলছিলেন, "কেরিয়ারে হয়তো অনেক সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু আইসিসি ট্রফি এর আগে জিততে পারেনি। সেই আফসোস ওর ছিল। বারবার সেই কথা বলতও। আর একটা স্বপ্ন ছিল ওর। মায়ের সামনে দেশের হয়ে ফাইনাল খেলার। ট্রফি জেতার। সেই স্বপ্নও পূরণ হয়েছে।" রোহিত আবার বললেন, তিনি দেশবাসীকে এই ট্রফি জয় উৎসর্গ করছেন।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় আপাতত অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেল। রোহিতের অবসর নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রচুর চর্চ চলেছে। হারলে কী হত বলা মুশকিল। তবে রবিবারের জয় রোহিতের ক্রিকেট কেরিয়ার আরও দীর্ঘায়িত করল। কোহলির ইংল্যান্ড সফর নিয়ে যে কিঞ্চিৎ অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, সেটাও কেটে গিয়েছে। কোচ গৌতম গম্ভীর অনেক বেশি নিশ্চিন্ত। যে গম্ভীরকে খুব বেশি হাসতে দেখা যায় না। সেই গম্ভীরকেও রবিবার রাতে প্রাণ খুলে হাসতে দেখা গেল। হার্দিক পাণ্ডিয়া, লোকেশ রাহুলদের জড়িয়ে ধরছিলেন। আসলে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড তারপর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে টেস্ট সিরিজ হারের পর কোচ গম্ভীরকেও নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছিল। বলাবলি হচ্ছিল, এভাবে চলতে থাকলে গম্ভীরকেও না সরে যেতে হয়। সেই সম্ভাবনাও চলে গিয়েছে। ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত কোচ থাকছেন গম্ভীরই।

একটা ট্রফি জয় ভারতীয় ক্রিকেটের পুরো আবহই বদলে দিয়ে গেল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ফাইনালের জন্য বেশিরভাগ ক্রিকেটারের পরিবার চলে এসেছিল। রোহিত চ্যাম্পিয়নের মেডেলটা মেয়ের গলায় পরিয়ে দিলেন।
  • মহম্মদ শামির আবার মা এসেছিলেন। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালের সময়ও শামির ইচ্ছে ছিল মাকে নিয়ে আসার।
  • কিন্তু তার আগে মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ হল শামিরও।
Advertisement