সুমন করাতি, হুগলি: আইনের চোখে দেখতে গেলে, ছেলে নিয়ম ভেঙেছে। অবাধ্যতা করেছে। কিন্তু নিয়মভাঙা পুত্রকে নিয়েই গর্বিত সমর মুর্মু। কেন? পুত্র শৌভিক যে ছুঁয়ে ফেলেছে স্বয়ং বিরাট কোহলিকে! 'কিং'য়ের ছোঁয়া পাওয়া ছেলেকে নিয়েই আনন্দিত সমর মুর্মু। ছেলের সব শাস্তিও মাথা পেতে নেবেন তিনি। বিরাটকে প্রণাম করা শৌভিককে নিয়ে আনন্দে ভাসছে আরামবাগের মধুপুর আদিবাসী পাড়া।
কলেজপড়ুয়া শৌভিকের কাছে বিরাটই যেন ধ্যানজ্ঞান। কেশবপুর কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম মহাবিদ্যালয়ের বিএ প্রথমবর্ষের ছাত্র সে। কিন্তু পড়াশোনার থেকেও বিরাটের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সমরবাবু জানিয়েছেন, "ছোট থেকে বিরাটের ফ্যান (Virat Kohli Fan) শৌভিক। ছোট থেকেই বলত পড়াশোনা ছাড়তে হয় ছাড়বে, তবু বিরাটকে একবার কাছ থেকে ছোঁবে।" গত আইপিএল চলাকালীন কাবলে থেকে সাইকেলে চেপে বেঙ্গালুরুতে পাড়ি দিয়েছিলেন শৌভিক। কিন্তু বিরাটের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। একবার পাড়ি দিয়েছিলেন কিং কোহলির বাড়ি পর্যন্ত। তাতেও প্রিয় তারকারকে একবার ছুঁয়ে দেখতে পারেননি। রবিবার অবশেষে রাঁচিতে শৌভিকের স্বপ্নপূরণ।
শৌভিকের বাবা সমর মুর্মু।
বিরাট শতরান করতেই মাঠে ঢুকে কোহলির পায়ে পড়েন শৌভিক। সঙ্গে সঙ্গে শৌভিককে সরিয়ে নিয়ে যান নিরাপত্তা কর্মীরা। পরে তাঁকে আটক করে রাঁচির পুলিশ। ম্যাচ শেষ হয়ে গেলেও পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন শৌভিক। প্রিয় ক্রিকেটারের সাক্ষাৎ পেলেও, এখনও তাঁর বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত। আপাতত ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরানোর চেষ্টা করছে পরিবার।
কিন্তু ছেলেকে দেখতে না পেলেও খুশি পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক সমর মুর্মু। বলছেন, "জানি ছেলে আইনভঙ্গ করেছে। কিন্তু গর্বও হচ্ছে যে সে বিরাটকে ছুঁতে পেরেছে।" প্রিয় ক্রিকেটারকে প্রণাম করার জন্য শাস্তি পেতে হবে শৌভিককে। তবে সেই সাজাও মাথা পেতে নেবেন। শৌভিকের মা পেশায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। মাটির বাড়িতে থেকেও শৌভিক যেভাবে স্বপ্নের কাছে পৌঁছেছে, স্পর্শ করেছে প্রিয় নায়ককে, তাতেই খুশি গোটা গ্রাম।
