সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের দুই ক্রিকেট মহানায়ক বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মার কাছে আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফর মহাগুরুত্বপূর্ণ বললেও কম বলা হয়। বিভিন্ন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই রায় দিয়ে দিয়েছেন যে, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিই রোহিত-বিরাটের ভবিষ্যৎ কেরিয়ার-সড়ক নির্ধারণ করে দেবে। তা, সেই মহা-সিরিজের প্রাক লগ্নে গুরু গ্রেগ দুই ভারতীয় মহারথীকে ফর্মে ফেরার একটা দাওয়াই দিয়েছেন। গ্রেগ চ্যাপেলের সে দাওয়াই হল, নিজেদের পুরনো সত্ত্বাকে ফেরানো। নিজেদের পুরনো মানসিকতাকে যেনতেন প্রকারেণ ফিরিয়ে আনা। যা প্রকারান্তরে বিরাট-রোহিতের হৃত ক্রিকেট গৌরবও ফিরিয়ে আনবে!
দেশের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে ০-৩ টেস্ট সিরিজ হার রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটকে। রোহিত-বিরাট-সহ একঝাঁক সিনিয়রের টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। প্রকট হয়ে পড়েছে, ভালো মানের স্পিন বোলিংয়ের সামনে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অসহায়তা। রোহিত-বিরাটের ধীরে ধীরে ক্রিকেট সায়াহ্নের সদরদরজায় পৌঁছনো খেয়াল করেছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি ও ভারতীয় ক্রিকেটের এক সময়ের ‘কুখ্যাত’ কোচ। গ্রেগের মতে, এক সময় যে তীব্র রান ক্ষুধা আর পারফর্ম করার উদগ্র বাসনা তাড়া করত রোহিত-বিরাটকে, আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে তাঁদের। যার বিশ্লেষণে শচীন তেণ্ডুলকররের উদাহরণ ব্যবহার করেছেন গুরু গ্রেগ।
অস্ট্রেলিয়ার এক কাগজে শুক্রবার গ্রেগ লিখেছেন, ‘আমাকে একবার শচীন জিজ্ঞাসা করেছিল, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট করা কেন কঠিন হয়ে যায়? শচীনকে আমি বলেছিলাম যে, ব্যাপারটা পুরোটাই মানসিক। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মনে হতে থাকে, এ বয়সে রান করাটা কত কঠিন। একাগ্রতা ধরে রেখে পারফর্ম করে যাওয়া কতটা টাফ। মনে করার কোনও কারণ নেই, চোখের দৃষ্টি দুর্বল হয়ে পড়ছে। কিংবা রিফ্লেক্স কমে আসছে। দরকার, গভীর ফোকাস ধরে রাখার। বয়স বাড়লে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে সেটা প্রয়োজন।’ এখানেই শেষ করেননি গ্রেগ। আরও লিখেছেন, ‘কম বয়সে রান করার দিকে বেশি ঝোঁক থাকে ক্রিকেটারদের। কিন্তু সময় যত যাবে, বিপক্ষ তত বেশি ব্যাটারের খুঁত বের করতে শুরু করবে। আবার বয়স বাড়লে প্লেয়ার অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে থাকে। বয়স কম থাকলে অনেক সুবিধে। পরিবেশ নিয়ে ভাবনা থাকে না। খেলার পরিস্থিতি নিয়ে ভাবনা থাকে না। প্লেয়ার তখন শুধু বল দেখে আর রান করার কথা ভাবে।’
আর বিরাট-রোহিতকে ঠিক সেই পরামর্শই দিয়েছেন চ্যাপেল। যা তিনি শচীনকে দিয়েছিলেন। ‘লিটল মাস্টার’কে গ্রেগ বলেছিলেন, ‘‘তুমি যদি পুরনো দিনের মতো খেলতে চাও, তাহলে তরুণ বয়সের মতো মানসিকতা দেখাতে হবে। সেই রকম ভাবনাচিন্তা করতে হবে। মনে রেখো, বয়স বাড়লে সেটা করাই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের হয়ে যায়।’’ গুরু গ্রেগের কথা ধরলে, সেই কাজটাই এবার করতে হবে কোহলি-রোহিতকে।