স্টাফ রিপোর্টার: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের মহিলা দলের জয় নিয়ে বিশেষ সন্দেহ ছিল না। তবে দেখার ছিল, পুরো পয়েন্ট তোলার পাশাপাশি নেট রান রেট ঠিক করার কাজটা কত ভালো ভাবে করতে পারে তারা। হরমনপ্রীত কৌর-স্মৃতি মান্ধানার দুরন্ত ব্যাটিং আর বোলারদের দাপটে ৮২ রানে ম্যাচ জিতে সেসব অঙ্ক ঠিকঠাকই মিলিয়েছে ভারত। তবে এখনও গ্রুপের প্রথম দুই দলে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত নয় হরমনপ্রীতদের। তাঁদের সেমিফাইনালে যাওয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার পথ হল শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো। অসাধ্য না হলেও কাজটা কতটা কঠিন, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
আসলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিয়মের জেরেই চাপ বেড়েছে ভারতের। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল সরাসরি শেষ চারে খেলবে। সেখানে প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে জটিল অঙ্কের মধ্যে পড়ে গিয়েছে ভারত। গ্রুপে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। ফলে বাকি দু’ম্যাচে রান রেট শুধরে নেওয়াই চ্যালেঞ্জ ছিল ভারতের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেটা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বুধবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকেন টিম ইন্ডিয়ার দুই ওপেনার শেফালি ভার্মা (৪৩) এবং স্মৃতি মান্ধানা (৫০)। ওপেনিং জুটিতে একটা সময় ১২.৩ ওভারে ৯৮ রান উঠে যায়। তবে পরপর দু’বলে তাঁরা দু’জনে ফেরায় মনে হয়েছিল চাপে পড়বে ভারত।
যদিও তা হতে দেননি অধিনায়ক হরমনপ্রীত। ২৭ বলে অপরাজিত ৫২ রানের একটা ঝকঝকে ইনিংসে দলের রান একপ্রকার পৌঁছে দিলেন শ্রীলঙ্কার ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিন ২৭ বলে করা হরমনপ্রীতের হাফসেঞ্চুরি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনও ভারতীয়র দ্রুততম, ভাঙলেন মান্ধানার রেকর্ড। এদিন শেষদিকে জেমিমা রড্রিগেজ (১৬) আর রিচা ঘোষ (৬ নঃআঃ) ঝড় তুলতে পারেনি। ফলে একটা সময় স্কোরটা দু’শোর কোঠার পৌঁছে যাবে মনে হলেও শেষ পর্যন্ত ভারত থামে ১৭২/৩ স্কোরে। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ভারতের মহিলা দলের।
ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে শুরু থেকেই চাপে ছিল শ্রীলঙ্কা। রেনুকা ঠাকুরের (২/১৬) দুরন্ত বোলিংয়ে ৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। সেখান থেকে কাভিশা দিলহারি (২১), অনুষ্কা সেঞ্জিয়নি (২০) এবং আমা কাঞ্চনার (১৯) সৌজন্যে কিছুটা রান তোলে শ্রীলঙ্কা। যদিও শেষ পর্যন্ত ৯০ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস, আশা শোভনা (৩/১৯) ও অরুন্ধতী রেড্ডির (৩/১৯) দাপটে। শ্রীলঙ্কা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই দুরন্ত একটি ক্যাচ ধরেন রাধা যাদব, অনেকটা পিছনে দৌড়ে। পরিবর্ত ফিল্ডার হিসাবে নামা রাধার সেই ক্যাচকে বলা হচ্ছে প্রতিযোগিতার সেরা ক্যাচের দাবিদার।
সমস্যা হল এ হেন জয়ের পরও ভারতকে সেমিফাইনালে ওঠার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলের দিকে। এই মুহূর্তে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। তাদের রান রেটও ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রুপের এক নম্বর দল হিসাবে অস্ট্রেলিয়া যে সেমিফাইনালে যাবে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিতে যাওয়ার লড়াই মূলত ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের। নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারত অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে কমবেশি সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে। কিন্তু ভারত যদি দুঃসাধ্য কাজটি করতে না পারে তাহলে নিউজিল্যান্ডকে অবশিষ্ট দুম্যাচের অন্তত একটি ম্যাচে হারতে হবে। নিউজিল্যান্ডের শেষ দুটি ম্যাচে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। দুটিই সহজ প্রতিপক্ষ। তাই ভারতের পক্ষে সবচেয়ে ভালো হবে শেষ ম্যাচে জেতা।