ভারত: ২৫১ (রিচা ৯৪, প্রতীকা ৩৭)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৫২-৭ (ডি ক্লের্ক ৮৪, লরা ৪২)
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলার রিচা ঘোষের অবিশ্বাস্য ইনিংস। মাত্র ৭৭ বলে ৯৪ রান। একাধিক বিশ্বরেকর্ড। কিন্তু এ হেন ইনিংস কার্যত জলে গেল বোলারদের ব্যর্থতায়। টানটান ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩ উইকেটে হেরে গেল ভারত। রিচার ইনিংসের পালটা একই পজিশনে নেমে একই ধরনের ইনিংস খেলে প্রোটিয়াদের ম্যাচ জিতিয়ে দলেন ডি ক্লের্ক। এই হার সেমিফাইনালের লড়াই আরও কঠিন করবে টিম ইন্ডিয়ার জন্য।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হরমনপ্রীত কৌরের ভারত এ দিন একটা সময় ১০২-৬ হয়ে গিয়েছিল! স্মৃতি মন্ধানা, জেমিমা রড্রিগেজ, হরমনপ্রীত নিজে, সকলেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন। ঠিক সে সময় তিনি মাঠে এলেন। আট নম্বরে নেমে ৭৭ বলে ৯৪ করে গেলেন বাংলার রিচা ঘোষ! রিচা না থাকলে ভারত এদিন ২০০ পেরোতে পারত কিনা সংশয়। ইনিংসের চল্লিশ ওভারের মাথায় ভারতের স্কোর ছিল ১৫৩-৭। তখন মনে হচ্ছিল, ২২০ উঠলেই অনেক হবে। সেখান থেকে শেষ দশ ওভারে ভারত তুলল ৯৮ রান! স্নেহ রানার ২৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংসের কথা অবশ্যই বলতে হবে। কিন্তু আসল হল রিচা। তাঁর ১১ বাউন্ডারি ও ৪ অতিকায় ছক্কার অতিমানবিক ইনিংস। রানার সঙ্গে নবম উইকেটে তাঁর ৮৮ রানের পার্টনারশিপ। যা না থাকলে লড়ার জায়গাটুকু থাকত না ভারতের।
কিন্তু রিচা যে ২৫১ রানের পুঁজি ভারতের বোলারদের দিলেন, সেটা কাজে লাগাতে পারলেন না ভারতের বোলাররা। শুরুটা বিশ্রী করলেও স্নায়ুযুদ্ধে জিতে গেলেন প্রোটিয়ারা। একটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকাও ৮৫ রানে পাঁচ উইকেট হারায়। সেখান থেকে ট্রায়ান এবং ডি ক্লের্ক পালটা আক্রমণ শুরু করেন। তাঁদের জুটিতে লড়াইয়ে ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪.২ ওভারে যখন মাত্র ৪১ রান বাকি তখন ট্রায়ানকে আউট করে ফের ম্যাচে রোমাঞ্চ এনে দেন স্নেহ রানা। কিন্তু তারপর কার্যত একাই লড়ে গেলেন ডি ক্লের্ক। শেষ চার ওভারে কার্যত একার হাতে জয় এনে দিলেন প্রোটিয়াদের। তিনি মাত্র ৫৪ বলে ৮৪ রান করে এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিলেন।
হারলেও রিচার বৃহস্পতিবারের ইনিংস ইতিহাসের খাতায় লেখা থাকবে। আট নম্বরে নেমে, অধিকাংশ সময় বোলারদের নিয়ে খেলে। কাঁধে অনন্ত চাপ নিয়ে। মহিলাদের বিশ্বকাপে ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান আজ থেকে বাংলার রিচারই। রিচার এদিনের ৯৪-এর পরে থাকবে ’৮২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফউজে খালিলির ৮৮। তার পরে থাকবে ’৯৩ সালে অঞ্জু জৈনের ৮৪ নটআউট। এদিন রিচার ইনিংস দেখে ঝুলন গোস্বামী বললেন যে, ‘‘পরিষ্কার বলছি, রিচা চলতি বিশ্বকাপে ভারতের এক্স ফ্যাক্টর। ভারতের বিশ্বকাপ জেতা না জেতা, ওর উপর অনেকটাই নির্ভর করে থাকবে।’’ তবে রিচার সঙ্গে বোলার ও অন্য ব্যাটারদেরও যে এগিয়ে আসতে হবে সেটা এদিনের ফলাফলেই স্পষ্ট।
