দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৫৯/১০ (মার্করাম ৩১, মুল্ডার ২৪, বুমরাহ ২৭/৫, কুলদীপ ৩৬/২)
ভারত: ৩৭/১ (রাহুল ১৩*, ওয়াশিংটন ৬*, জ্যানসেন ১১/১)
১২২ রানে পিছিয়ে ভারত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছ'বছর পর শহরে টেস্ট। ইডেনে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ঘিরে আগ্রহ যে ভালোরকম ছিল, তা বোঝা গিয়েছিল আগেই। গোষ্ঠ পাল সরণি থেকে, ময়দান - সর্বত্রই টিকিটের চাহিদায় লম্বা লাইন দেখা গিয়েছিল। আর শনিবার শীতের রোদ ঝামরে পড়তেই দেখা গেল হাজারে হাজারে মানুষ ইডেনমুখো। ঘড়ির কাঁটা যখন ন'টা ছুঁইছুঁই, 'টসভাগ্য' ফিরল না শুভমানের। তাতে কি? সঞ্চালক রবি শাস্ত্রীকে তিনি বলে দিলেন, "হয়তো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টসের ভাগ্য ফিরবে।" কথাগুলো বলার সময় আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ছিল গিলের গলায়। সেই আত্মবিশ্বাসই দেখা গেল গোটা ভারতীয় দলে। বুমরাহ, কুলদীপ, সিরাজদের দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেল মাত্র ১৫৯ রানে। জবাবে ভারতের রান ১ উইকেটে ৩৭।
ক্রিকেটের নন্দনকাননে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেটাই প্রত্যাশিত ছিল। প্রথম একাদশে ৪ স্পিনারকে রেখে এদিন ইডেনে নেমেছে ভারত। বলা ভালো এক স্পিনার এবং ৩ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার সুযোগ পেয়েছেন। সুযোগ পেলেন না সাই সুদর্শন। টিম ম্যানেজমেন্টের এহেন সিদ্ধান্তে বিতর্কও চলছে বিস্তর। কিন্তু মাঠের হিসাবে ফিরলে সেই সব তর্কবিতর্ক সরিয়ে রাখতেই হবে। সেই কাজটিই করে গেলেন ভারতীয় বোলাররা।
অথচ প্রথম দশ ওভার দেখে বোঝা যায়নি ভারতীয় বোলারদের দাপটের সামনে কার্যত সর্ষেফুল দেখবে প্রোটিয়া ব্যাটাররা। প্রথম ১০ ওভারে ৫৭ রান তুলে ফেলেন দুই ওপেনার এডেন মার্করাম এবং রায়ান রিকলটন। কিন্তু ১১তম ওভারে মারকুটে মেজাজে থাকা রিকলটনকে ফেরান বুমরাহ। ১৩তম ওভারে এসে আবারও বুমরাহ ম্যাজিক। এবার মার্করামকে তুলে নেন তারকা পেসার। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনারের সংগ্রহ যথাক্রমে ৩১ এবং ২৩। সেই শুরু। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা টেম্বা বাভুমা (৩)-কে ফেরালেন কুলদীপ যাদব। ১০৫ রান তিন উইকেট খুইয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিরতির খানিক সময়ের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার অর্ধেক দল প্যাভিলয়নে ফেরে। উইলেম মুল্ডারকে ২৪ রানে ফেরান কুলদীপ। এরপর টনি ডি জর্জি (২৪) বুমরাহের বলে এলবিডব্লিউ’র শিকার। সকালের দিকে নতুন বলে সফল হননি সিরাজ। ওভারপিছু ৮ রান করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পুরনো বল হাতে আসতেই জাত চেনালেন। সিরাজের বলেই ১৬ রানের মাথায় আউট হন কাইল ভেরেইনি। সেই ওভারেই মার্কো জানসেনকেও শূন্য রানে ফেরান ৩১ বছর বয়সি ভারতীয় পেসার।
চা পানের বিরতির আগে অক্ষর প্যাটেল ফেরালেন করবিন বস (৩)-কে। চা পানের বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৮ উইকেটে ১৫৪। যে ভঙ্গিতে রান তোলা শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, সেই গতিতে লাগাম পরিয়ে দিয়েছেন বুমরাহ, সিরাজ, কুলদীপরা। চা বিরতির পর মাত্র ৩ ওভার টেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। বুমরাহের বলে বোল্ড হার্মার। করেন মাত্র ৫ রান। এরপর কেশব মহারাজ (০) বুমরাহের ইয়র্কার সামলাতে পারলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হল ১৫৯ রানে। বুমরাহের শিকার ৫ উইকেট। কুলদীপ ও সিরাজ নিলেন ২ উইকেট। অক্ষরের পান ১ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে রান পেলেন যশস্বী জয়সওয়াল। মাত্র ১২ রান করে মার্কো জ্যানসেনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর সেই 'মহাবিতর্কিত' তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন ওয়াশিংটন সুন্দর। শুক্র-সকালে সাই সুদর্শনের জায়গায় তিনে ওয়াশির নাম দেখে অবাক বনে গিয়েছিলেন প্রাক্তনরা। নেটভুবনেও ঝড় উঠেছিল। সেই ওয়াশিংটন কিন্তু খারাপ ব্যাটিং করেননি। উইকেট কামড়ে পড়ে থেকে করলেন ৩৮ বলে অপরাজিত ৬ রান। ১৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন কেএল রাহুলও। দুই ব্যাটারই কোনওরকম ঝুঁকির পথে হাঁটেননি। প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান ১ উইকেটে ৩৭।
