স্টাফ রিপোর্টার: রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের জন্য শুভমান গিল, ঋষভ পন্থ, অক্ষর প্যাটেল, মহম্মদ সিরাজ, জসপ্রীত বুমরাহদের মতো তারকাদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতীয় দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে। যার ফলে সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বাংলাদেশ শিবির থেকে একটা কথা বলা হচ্ছিল, তাঁদের টিমে অভিজ্ঞতা নাকি বেশি। টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার টি-টোয়েন্টি সিরিজটা প্রচণ্ডভাবে জিততে চেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। কিন্তু গোয়ালিয়ের প্রথম ম্যাচে হারের পর দিল্লিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও একটা ব্যাপার খুব ভালোভাবে বুঝে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেটা হল স্কিল হোক কিংবা প্রতিভা সব দিক থেকেই ভারত তাদের থেকে কয়েকশো গুণ এগিয়ে। শুধু মাত্র অভিজ্ঞতাতে এগিয়ে থাকলেই সিরিজ জেতা যায় না।
এদিন শুরুটা অবশ্য খুব ভালো হয়নি ভারতের। টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। সঞ্জু স্যামসন আউট হলেন দ্বিতীয় ওভারে। পরের ওভারে আর এক ওপেনার অভিষেক শর্মা। ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমারও পাওয়ার প্লে’র মধ্যে প্যাভিলিয়নে। তাহলে কি সিরিজ জয়ের জন্য শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? প্রশ্নটা তখন ঘোরাফেরা করছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে। কারণ তিন উইকেট হারিয়ে তখন যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে ভারত। কিন্তু সেখান থেকেই পুরো চাপের পরিস্থিতি কাটিয়ে দিলেন দু’জন মিলে। একজন নীতীশ কুমার রেড্ডি। জিম্বাবোয়ে সফরে টিমের সঙ্গে গেলেন সেখানে সুযোগ হয়নি। গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচেই যেভাবে ব্যাটিং করে গেলেন, সেটা ভারতীয় কোচ গৌতম গম্ভীরকে প্রচণ্ড তৃপ্তি দেবে, সেটা বলে দেওয়াই যায়। শুরু থেকেই মারমার কাটকাট ব্যাটিং করে গেলেন। নীতীশের ৩৪ বলে ৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটা সাজানো রইল চারটে বাউন্ডারি আর সাতটা ছয় দিয়ে। স্ট্রাইক দু’শো কুড়ির কাছাকাছি। গম্ভীরের অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছিল নীতীশের ইনিংসে তিনি ঠিক কতটা সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে রিঙ্কু সিংয়ের কথাও বলতে হবে। ভারতীয় ক্রিকেটে রিঙ্কুর উত্থানের কাহিনী সবার জানা। যত দিন যাচ্ছন টি-টোয়েন্টি টিমে নিজের জায়গা আরও মজবুত করছেন। এদিনও চাপের পরিস্থিতিতে ২৯ বলে ৫৩ রানের ঝকঝকে একটা ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন রিঙ্কু। দু’জনের ১০৮ রানের পার্টনারশিপই ভারতের বড় রানের ভিত গড়ে দিয়ে যায়। তারপর শেষের দিকে হার্দিক পাণ্ডিয়ার ১৯ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস। কুড়ি ওভারে ভারত তোলে ২২১/৯।
ম্যাচের গতিপ্রকৃতি কী হতে চলেছে, তার একটা আন্দাজ তখনই পাওয়া যাচ্ছিল। বাকি কাজটা করে দিচ্ছেন
ভারতীয় বোলাররা। শুরু থেকেই চাপে রাখেন বাংলাদেশ ব্যাটিংকে। যার ফলে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেটে হারাতে থাকে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আর তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। কুড়ি ওভারে তারা তোলে ১৩৫/৯। গোয়ালিয়রে বাংলাদেশকে দুরমুশ করার পর দিল্লিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ৮৬ রানের বিশাল জয় পেল ভারত। একইসঙ্গে সিরিজ জয়ের কাজটাও শেষ করে ফেললেন সূর্যকুমাররা। সিরিজের শেষ ম্যাচ এখন স্রেফ নিয়মরক্ষার।
এই ম্যাচে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড গড়েছে টিম ইন্ডিয়া। এটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনও দলের করা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এর আগে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২২৪ রান করেছিল। তারপরই বুধবার ভারতের করা ২২১ রান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বুধবার মোট ১৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সেটাও একটা রেকর্ড। এর আগে টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আর কেউ এত ছক্কা হাঁকাতে পারেনি। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছিল।