সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইপিএল নিলামে চেনা ছকেই নেমেছিল কেকেআর। ৬ জনকে রিটেন করার পর হাতে ছিল ৫১ কোটি। লক্ষ্য ছিল, যথাসম্ভব প্রাক্তন নাইটদের ফিরিয়ে আনা। শুরু থেকে ফোকাস ছিল সেদিকেই। কিন্তু প্রাক্তন নাইটদের ফেরানোর চক্করেই খানিক গণ্ডগোল বাঁধিয়ে ফেললেন ভেঙ্কি মাইশোররা।
একা ভেঙ্কটেশ আইয়ারের জন্যই ২৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা খসিয়ে ফেলল নাইটরা। অর্থাৎ মোট পার্সের প্রায় ৪৫ শতাংশ চলে গেল ভেঙ্কির জন্যই। ২০২১ সালে ভেঙ্কটেশ আইয়ার প্রায় একার হাতে ফাইনালে তুলেছিলেন নাইটদের। যার ফলশ্রুতিতে পরের বছর শুভমান গিলকে ছেড়ে দিয়ে তাঁকে রিটেন করে নাইটরা। তার পরও টুকটাক ভালো পারফর্ম করেছেন তিনি। গতবারের আইপিএল জয়েও বড় ভূমিকা ছিল ভেঙ্কটেশের। কিন্তু তাঁর কৃতিত্বকে এতটুকু খাটো না করেই বলা যায় ভেঙ্কির জন্য বড্ড বেশি খরচ করে ফেললেন ভেঙ্কি মাইশোররা। ফলে যা হওয়ার তাই হল, অন্য ক্রিকেটারের জন্য বিশেষ এগোনো গেল না। হাত কামড়াতে হল ফিল সল্ট, হ্যাজেলউডদের অন্য দলে যেতে দেখে।
নিলামের শুরুর দিকে শ্রেয়স আইয়ার, স্টার্কদের জন্য অল্পসল্প বিড করলেও সেভাবে আগ্রহ দেখায়নি নাইটরা। লক্ষ্য ছিল পুরনো দলই ফিরিয়ে আনা। কিন্তু কারও জন্যই মাত্রাতিরিক্ত খরচ না করা। অথচ সেই নাইটরাই ভেঙ্কটেশকে দিল ২৩ কোটি ৭৫। যদিও নাইট শিবির বলছে, ভেঙ্কটেশ শুধু যে কয়েক মরশুম ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছেন তাই নয়, তিনি কিন্তু কেকেআরের লিডারশিপ গ্রুপেরও সদস্য। আগামী মরশুমে তাঁর হাতেই অধিনায়কত্বের ব্যাটন থাকলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ভেঙ্কিকে এই বিপুল অর্থে কেনার পর আগেরবারের আইপিএল জয়ের অন্যতম নায়ক ফিল সল্টের পিছনে অল আউট যাওয়া গেল না। মাত্র সাড়ে এগারো কোটিতে তাঁকে কিনে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। নাইটরা ১১ কোটি অবধি গিয়ে থেমে গেল। একইভাবে হ্যাজেলউডও হাতছাড়া হলেন। একটা সময় মহম্মদ শামির জন্যও বিড করেছিল নাইটরা। কিন্তু তাঁর পিছনেও ৮ কোটির বেশি খরচ করতে চায়নি কেকেআর।
এই সিদ্ধান্তগুলি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও কেকেআর যাঁদের কিনেছে, তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার বিশেষ অবকাশ নেই। ভেঙ্কির পরই ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় প্রোটিয়া ব্যাটার কুইন্টন ডি'ককে দলে নেয় নাইটরা। রহমানুল্লাহ গুরবাজকে বেস প্রাইস ২ কোটিতেই ফিরিয়েছে কেকেআর। প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটার অঙ্গকৃষ রঘুবংশীকে দলে নিতেও ৩ কোটি টাকা খসাতে হয়েছে নাইটদের। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকারই আরেক পেসার আনরিখ নখিয়াকে সাড়ে ৬ কোটিতে কিনেছে কেকেআর। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে সস্তায় নাইটরা পেয়ে গিয়েছে বৈভব অরোরাকে। মাত্র ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকায় কেকেআরে ফিরেছেন গতবারের নাইট। দেশীয় স্পিনার মায়াঙ্ক মার্কান্ডেকেও শেষবেলায় ৩০ লক্ষ টাকায় তুলে নিয়েছে নাইটরা।
ডি'কককে ওই দামে পেয়ে যাওয়াটা সত্যিই কেকেআরের ভাগ্যি। সল্ট আগের বার যে কাজটা করেছেন, এবার নাইটরা সেটাই প্রত্যাশা করবে ডি'ককের কাছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে দলের নেতৃত্বও দেওয়া যেতে পারে তাঁকে। আগেরবার স্টার্ককে যে ভূমিকায় দেখা গিয়েছে সেই একই ভূমিকায় এবার দেখা যেতে পারে নখিয়াকে। তিনিও কিন্তু আইপিএলে বেশ সফল। এই দুই ক্রিকেটারের যেটা বিপক্ষে যাচ্ছে, সেটা হল তাঁদের বয়স। দুই প্রোটিয়া ফিট না হলে নাইটরা কিন্তু আগের থেকে দুর্বলই হবে। তাছাড়া, টপ অর্ডারে আরও একজন ভালো মানের ভারতীয় ব্যাটার, আরও একজন ভালো মানের পেসার এবং প্রথম একাদশের ব্যাকআপ কিনতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটা নাইট ম্যানেজমেন্টকে তাড়া করবে সেটা হল, এবার দলের অধিনায়কত্ব করবেন কে? কুইন্টন ডি'কক, ভেঙ্কটেশ আইয়ার নাকি রিঙ্কু সিং?