শ্রীলঙ্কা: ১২১/৬ (২০ ওভার), (গুনারত্নে ৩৯, পেরেরা ২০, মাদাবি ২১, দীপ্তি ২০/১, চরণী ৩০/১)
ভারত: ১২২/২ (১৪.৪ ওভার), (স্মৃতি ২৫, জেমেইমা ৬৯*, কাভিন্ডি ২০/১)
৮ উইকেটে জয়ী ভারত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পলাশ পর্ব অতীত করে ফের ২২ গজে স্মৃতি মন্ধানা। বিশ্বকাপের পর ব্যক্তিগত পৃথিবীটা হঠাৎ করেই হতাশায় ভরে গিয়েছিল। ২৩ নভেম্বর গায়ক পলাশের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার কথা ছিল তাঁর। গায়ে হলুদ থেকে মেহেন্দি, বিয়ের আগের নানা অনুষ্ঠানও হয়েছিল হইহই করে। কিন্তু তারপর? আচমকাই তছনছ হয়ে গিয়েছিল সব কিছু। ব্যক্তিগত জীবনের সেই সব ঝড়ঝাপ্টা সামলে বিশ্বকাপ জেতার পর খেলায় ফিরে ২৫ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দিলেন ক্রিকেটই তাঁর জীবনের প্রথম ভালোবাসা। স্মৃতি ছাড়াও জেমাইমার দুরন্ত ব্যাটিং, সর্বোপরি ভারতীয় বোলারদের দাপটে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ শুরু করল হরমনপ্রীতের ভারত।
আবার একটু অতীতে ফিরে যাওয়া যাক। বিয়ের দিন সকালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মন্ধানা। তখনই বিয়ে স্থগিত করে দেওয়া হয়। পলাশ নিজেও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে পরে প্রকাশ্যে আসে, বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীনই নাকি এক কোরিওগ্রাফারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন পলাশ। ফাঁস হয় অন্য এক মহিলার সঙ্গে পলাশের ঘনিষ্ঠ চ্যাটও। নেটিজেনদের বক্তব্য, সম্ভবত সেই কারণেই পলাশের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙেছেন স্মৃতি। তবে ব্যক্তিগত জীবনের আগে দেশ, সে কথাই যেন বারবার জানান দিচ্ছিল তাঁর ব্যাট।
২৫ রান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নিরিখে মোটেও কম নয়। যেটুকু সময় উইকেটে থাকলেন, কার্যকরী ব্যাটিং করলেন। শুরুতে কিছুটা নড়বড়ে দেখিয়েছিল বটে। রানের খাতা খোলেন যে শটটা মেরে, তাতে আউট হয়ে যেতে পারতেন। ব্যাটে বলেও হচ্ছিল না ঠিক মতো। ২৫ বলের ইনিংসটিতে চারটি বাউন্ডারি হাঁকালেন। দেখা গেল দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভও। চামারি আটাপাট্টুর টানা দু'বলে চার মেরে পুরনো ঝলক দেখালেন। এর মাঝে অবশ্য রেকর্ডও গড়লেন ভারতের সহ-অধিনায়ক। প্রথম ভারতীয় হিসাবে মহিলাদের টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪০০০ রান পূর্ণ করলেন। গোটা বিশ্বের নিরিখে চার হাজার রান করা দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসাবে নজির তাঁর। শীর্ষে রয়েছেন কিউয়ি সুজি বেটস। তবে তাঁর থেকে কম বলে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন স্মৃতি। শেষ পর্যন্ত ইনোকা রণবীরার বলে কভারের উপর দিয়ে ছক্কা মারতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৯ রানে ফেরেন শেফালি বর্মা। এর পর প্রাণের বন্ধু জেমাইমা রডরিগেজের সঙ্গে ৫৪ রানের অতি জরুরি জুটি গড়েন স্মৃতি। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, কঠিন সময়ে বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ খেলতে রাজি হননি জেমাইমা। ২২ গজেও দু'জনকে একই সঙ্গে সাবলীল দেখিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চতুর্দশ অর্ধশতক হাঁকান জেমি। শেষ পর্যন্ত তাঁর নামের পাশে ৪৪ বলে অপরাজিত ৬৯ রান। অধিনায়ক হরমনপ্রীত অপরাজিত থাকলেন ১৫ রানে।
এর আগে অবশ্য প্রথমে ব্যাটিং করে শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি। ক্রান্তি গৌড়, দীপ্তি শর্মা, শ্রী চরণী ভাগ করে নেন ১টি করে উইকেট। বাকি তিনটি রান আউট। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ রান বিশমি গুনারত্নের। তিনি করেন ৩৯ রান। হাসিনি পেরেরা এবং হর্ষিতা সামারাবিক্রমা করেন ২০ এবং ২১। জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুব বিশেষ চাপের মুখে পড়তে হয়নি ভারতকে। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে হারিয়ে ১৪.৪ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় উইমেন ইন ব্লু।
