shono
Advertisement
Richa Ghosh

'ঠিক করেছিলাম শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব', বিশ্বকাপ জিতে বলছেন রিচা

'এই জয় যতটা আমাদের, ঠিক ততটাই ঝুলুদিদেরও', বলছেন বঙ্গকন্যা।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 10:17 AM Nov 04, 2025Updated: 02:32 PM Nov 04, 2025

আলাপন সাহা: রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) মনে হচ্ছিল রবিবারের রাত যেন শেষ না হয়। অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ জিতেছেন। আইপিএল জিতেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা। রিচা যেন এখনও একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। রিচা বলছিলেন, "স্বপ্নপূরণের রাত। কখনও ভাবতে পারিনি জীবনে এমন একটা রাত আসবে। তবে আত্মবিশ্বাস ছিল। পরপর যখন কয়েকটা ম্যাচে হারলাম, তখনও কেউ প্যানিক করিনি। বরং জানতাম বিশ্ব সেরা হওয়ার ক্ষমতা আমাদের টিমের রয়েছে। বহুদিন অপেক্ষা করেছি। অনেক পরিশ্রম করেছি। শেষ পর্যন্ত আমরা পেরেছি। আজ মনে হচ্ছে সবকিছু সার্থক। আমরা সারা রাত সেলিব্রেশন করেছি। গোটা দেশও আমাদের সাফল্যে আবেগে ভেসে গিয়েছে। আমরা ভারতীয় সমর্থকের কাছে কৃতজ্ঞ। ওঁরা সবাই আমাদের উপর ভরসা রেখেছিলেন।'

Advertisement

প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বজয়। রিচার মাথায় অবশ্য ওসব কিছুই ছিল না। পরে ব্যাপারটা জানতে পারেন। বলছিলেন, "আগে জানতাম না। পরে ব্যাপারটা শুনলাম। অবশ্যই গর্বের ব্যাপার।" মহেন্দ্র সিং ধোনির বড় ভক্ত। ধোনিকে আইডল মনে করেন। ধোনিকে দেখেই ফিনিশার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন রিচা। যেভাবে ক্রিজে দাঁড়িয়ে একের পর এক ছক্কা মারেন তিনি, তাতে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের 'ধোনি' বলা শুরু হয়ে গিয়েছে রিচাকে। সেই প্রসঙ্গ উঠতেই থামিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, "প্লিজ ধোনি ভাইয়ের সঙ্গে কোনও তুলনা করবেন না। উনি কিংবদন্তি। দেশকে কত ট্রফি দিয়েছেন বলুন তো। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সবকিছু।"

দেশের মাঠে বিশ্বকাপ খেলার চাপ সবসময় থাকে। ফাইনালে সেই চাপ যে আরও অনেক বেড়ে যায়, সেটা বলাই যায়। ফাইনালের আলাদা প্রেশারটা কী অনুভূত হয়েছিল? রিচার কথায়, "দেখুন বিশ্বকাপে সবসময়ই চাপ থাকে। আর ফাইনালে তো আরও বেশি চাপ ছিল। নভি মুম্বইয়ের গ্যালারি পুরো ভর্তি ছিল। এরকম ভরা গ্যালারির সামনে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা খুব একটা ছিল না। তবে আমরা ঠিক করেছিলাম, ম্যাচটা জিতেই মাঠ ছাড়ব। আমরা ঠিক করেছিলাম, কোনওভাবেই হাল ছাড়ব না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও লড়ে যাব। এত কাছে পৌঁছে যাওয়ার পর ট্রফি ছাড়া ফিরতে পারব না। ফাইনালে নামার আগে টিম হাডলে সবাই আমরা একই কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম টুর্নামেন্টের শেষ দিন। নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে হবে। সবকিছু দিয়ে লড়তে হবে। বাউন্ডারি আটকাতে হবে। আমরা একে অন্যের সাফল্য উপভোগ করেছি।"

রবিবার রাতে ট্রফি জয়ের উৎসবে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটল। হরমনপ্রীত কৌর নিজে এসে মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামীর হাতে ট্রফিটা তুলে দেন। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তি কখনও বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাননি। আট বছর আগে কাপ জয়ের খুব কাছে গিয়েও শেষমেশ সেটা হয়নি। হরমনপ্রীত যখন ঝুলনের হাতে কাপটা তুলে দিলেন, ভারতের কিংবদন্তি পেসার নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারেননি। হরমনপ্রীতকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন ঝুলন। রিচা বলছিলেন, "ঝুলুদি (ঝুলনের ডাকনাম) মাঠে আমাদের সঙ্গেই ছিল। এই দলটার সঙ্গে ঝুলুদি বহু বছর জড়িয়ে। আমরা ঝুলুদিকে কথা দিয়েছিলাম বিশ্বকাপ জিতব। আর ট্রফিটা ওর হাতে তুলে দেব। সেটাই করেছে হ্যারিদি। এই জয় যতটা আমাদের, ঠিক ততটাই ঝুলুদিদেরও।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ জিতেছেন। আইপিএল জিতেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা।
  • প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বজয়। রিচার মাথায় অবশ্য ওসব কিছুই ছিল না।
  • হরমনপ্রীত যখন ঝুলনের হাতে কাপটা তুলে দিলেন, ভারতের কিংবদন্তি পেসার নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারেননি।
Advertisement