সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেলবোর্ন টেস্টে ভারতীয় দলের হারের পাশাপাশি দিনভর চর্চায় যশস্বী জয়সওয়ালের আউট। আর ভারতীয় ওপেনারকে আউট দেওয়ার সিদ্ধান্ত যে থার্ড আম্পায়ারের, সংবাদের শিরোনামে এদিন উঠে এলেন তিনিও। মাঠের আম্পায়ার ও প্রযুক্তিকে উপেক্ষা করে নিজের মতামত জানিয়ে যশস্বীকে প্যাভিলিয়নে ফেরান বাংলাদেশের থার্ড আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকত। কী তাঁর পরিচয়?
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ঠিক কোন ঘটনায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭১তম ওভারে যশস্বী আউট হন। প্যাট কামিন্সের বাউন্সার চালিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটার। তা মিস করলে চলে যায় উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাচের আবেদন জানান কামিন্স। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার তাতে কর্ণপাত করেননি। রিভিউ নিতে বিন্দুমাত্র দেরি করেননি অজি অধিনায়ক। দীর্ঘক্ষণ রিভিউতে এটা পরিষ্কার যে ব্যাটের সঙ্গে বলের কোনও সংযোগ ঘটেনি। স্নিকোমিটারও বারবার তারই প্রমাণ দিয়েছে। তারপর বল ট্র্যাকিংও করেন বাংলাদেশি থার্ড আম্পায়ার। সেখানে তাঁর মনে হয় বল যশস্বীর ব্যাটে লেগে দিক বদল করেছে। সেই কারণেই আউট দিয়ে দেন তিনি। ভারত যেটুকু লড়াই চালাচ্ছিল, সেটুকুও বন্ধ হয়ে যায়। শরফুদ্দৌলা সৈকতের এহেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সুনীল গাভাসকর, ইরফান পাঠানের মতো প্রাক্তনীরা।
১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঢাকায় জন্ম শরফুদ্দৌলার। বাংলাদেশের আমেরিকান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানব সম্পদ বিষয়ে এমবিএ করেছেন। ২০০০ ও ২০০১ সালের মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিসের হয়ে লেগ স্পিনার হিসেবে খেলতেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩১টি উইকেট নিয়েছেন। তবে ২২ গজে বিশেষ সাফল্য না পাওয়ায় মনোযোগ দেন আম্পারিংয়ে। ২০০৭ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আম্পারিং দিয়ে অভিষেক ঘটে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আম্পায়ার ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসাবে আইসিসির এলিট প্যানেলে যোগ দেন। এখনও পর্যন্ত ২৪টি টেস্ট, ১০০টি ওয়ানডে এবং ৭৩টি টি-টোয়েন্টিতে মাঠের আম্পায়ার বা তৃতীয় আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
এদিন স্নিকোতে কোনও স্পাইক না দেখা গেলেও তাঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রবি শাস্ত্রী। বলেন, তৃতীয় আম্পায়ার চাইলে স্নিকো না মেনেও নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সেই নিয়ম আছে। তিনি দেখছেন বল গ্লাভসে লাগার পর দিক পরিবর্তন করেছে। তাই তিনি আউট দিয়েছেন। তবে শরফুদ্দৌলার সিদ্ধান্তে যে মন ভেঙেছে ১৪০ কোটি ভারতীয়র, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।