রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় ও অরিঞ্জয় বোস: সৌরভের পর স্নেহাশিস। ফের বিসিসিআইয়ের মহাগুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে পারেন গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য। শোনা যাচ্ছে, জয় শাহর ছেড়ে যাওয়া পদের প্রবল দাবিদার হয়ে উঠেছেন স্নেহাশিস। অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে আগামী দিনে তাঁকে বিসিসিআইয়ের সচিব পদে দেখা যাবে।
বাংলা ক্রিকেটমহল বলে, বর্তমান সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট থেকে যতটা পাওয়া উচিত ছিল, তা তিনি কখনই পাননি। বাংলার হয়ে খেলতেন যখন, রনজি সেমিফাইনালে ভাঙা পা নিয়ে অমর ইনিংস খেলার ইতিহাস তাঁর রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে বাংলা যে একবার রনজি ট্রফি জিতেছে, তার ফাইনাল খেলার ভাগ্য হয়নি স্নেহাশিসের। বরং স্নেহাশিসের জায়গায় ১৯৮৯-৯০-এর রনজি ফাইনালে অভিষেক হয় তাঁরই ভাই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। দুই ভাইয়ের জীবনটাই পালটে যায় তার পর। সৌরভ ঢুকে পড়েন জাতীয় সার্কিটের আলোকবর্তিকায়। পরবর্তীতে দেশের হয়ে খেলা, অধিনায়ক হওয়া, সবই হয়েছে। আর যথেষ্ট ভালো ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও স্নেহাশিসকে আটকে পড়তে হয় ঘরোয়া ক্রিকেটের বৃত্তে। পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট প্রশাসনে আসেন স্নেহাশিস। বর্তমানে তিনি সিএবি প্রেসিডেন্টও। কিন্তু তার পরেও ময়দান বলে সৌরভের অগ্রজের সঠিক মূল্যায়ন এখনও হয়নি। ক্রিকেট থেকে প্রাপ্য মর্যাদা তিনি এখনও পাননি।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে, সে প্রাপ্য মর্যাদা হয়তো এবার পেতে চলেছেন স্নেহাশিস। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, জয় শাহ পরবর্তী অধ্যায়ে, ভারতীয় বোর্ড সচিবের চেয়ারে বসতে দেখা যেতে পারে তাঁকে!
এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় আসেনি। দিন শেষে বোর্ড রাজনীতি তো! না আঁচালে বিশ্বাস নেই। কিন্তু সম্ভাবনা লিখলে ভুল হবে। একটা প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে স্নেহাশিসের বোর্ড সচিবের চেয়ারে বসার। আসলে বর্তমান বোর্ড সচিব জয় শাহ আর কয়েকদিনের মধ্যেই আইসিসির চেয়ারম্যান পদে উপবিষ্ট হচ্ছেন। আগামী ৩০ নভেম্বর বোর্ড সচিব পদে মেয়াদ শেষ হচ্ছে জয়ের। ১ ডিসেম্বর থেকে তিনি আইসিসি প্রধান। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী, জয়ের প্রস্থানের ৪৫ দিনের মধ্যে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকে নতুন সচিব বেছে নিতে হবে। এখনও অনেক 'যদি', 'কিন্তু' বাকি। এখনও অনেক পারমুটেশন-কম্বিনেশন বাকি। তবে নতুন বোর্ড সচিবের লড়াইয়ে স্নেহাশিস যে প্রবলভাবে ঢুকে পড়েছেন লিখে দেওয়াই যায়। সূত্র মারফত শোনা গেল, বোর্ড মহল থেকে তাঁর কাছে নাকি ফোনও গিয়েছে। স্নেহাশিসকে যদিও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া গেল না।
তবে এখানে একটা ব্যাপারও আছে। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় বোর্ডের পূর্ণাঙ্গ বার্ষিক সভা। যিনিই নতুন বোর্ড সচিব হোন না কেন, তাঁকে সেই সভায় নতুন করে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। সে যা-ই হোক, পরের সেপ্টেম্বরে কী হবে না হবে পরের ব্যাপার। আপাতত যদি স্নেহাশিস প্রাপ্য ক্রিকেটীয় বিচারটুকু পান, মন্দ কী?