স্টাফ রিপোর্টার: পারথ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির সেঞ্চুরির নেপথ্য রহস্য কী? সুনীল গাভাসকরের মতে, স্টান্স বদল! পারথে প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছিলেন বিরাট। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি সেঞ্চুরি করে দেন। টেস্ট ক্রিকেটে যা তাঁর তিরিশ নম্বর সেঞ্চুরি। প্রবাদপ্রতিম গাভাসকরের মনে হচ্ছে, ব্যাটিং স্টান্সে কিছু অদলবদল করেছেন বিরাট।
মনে রাখা দরকার, পারথ টেস্টে (BGT 2024-25) রান না পেলে চাপ আরও বাড়ত বিরাটের উপর। কারণ, দীর্ঘদিন তিনি টেস্টে বড় রান পাচ্ছিলেন না। টার্নিং পিচে স্পিনারদের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্বলতা ধরা পড়ছিল। এমনকী টেস্ট টিমে বিরাটের জায়গা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে প্রত্যাবর্তন। "দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার সময় বিরাটকে শারীরিকভাবে খুব রিল্যাক্সড দেখাচ্ছিল। প্রথম ইনিংসে যখন নেমেছিল কোহলি, ভারতের দু'উইকেট দ্রুত পড়ে গিয়েছিল। যার ফলে ও নিজেও চাপে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে দেখলাম, বিরাট স্টান্স কিছুটা বদলেছে। পায়ের পজিশনও পাল্টেছে। খুব বেশি নয়। সামান্যই। আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়ায় শট খেলতে গেলে যে উচ্চতায় বল আসা পছন্দ করে বিরাট, সেটা ওই অ্যাডজাস্টমেন্টের জন্য পেয়ে গিয়েছিল ও," বুধবার বলে দিয়েছেন গাভাসকর। তাঁর কথায়, "জশ হ্যাজেলউডকে মিড উইকেট দিয়ে যে বাউন্ডারিটা মেরেছিল সে দিন বিরাট, দেখে দারুণ লেগেছিল। আমার অন্তত মনে হয়েছে, ওই শটটা খেলা সহজ ছিল না। বিরাটের স্টান্স অনুযায়ী, ওর পক্ষে স্ট্রেট ড্রাইভ খেলাটা তুলনামূলক সহজ ছিল। কিন্তু সেটা না করে বিরাট মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারিটা মারল। দেখার মতো শট।"
শুধু একা গাভাসকর নন। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ওপেনার ম্যাথু হেডেনও মনে করেন যে, পারথ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে স্টান্সে বদল এনে রানে ফিরে এসেছেন কোহলি। হেডেন বলেছেন, "আমারও মনে হয়েছে যে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সময় স্টান্সে বদল করেছিল বিরাট। আমি তো বলব, সেটা ভালো ব্যাপার। ভারতে খেলতে গেলে, স্রেফ উল্টোটা করা উচিত। একটু লোয়ার স্টান্সে ব্যাট করা উচিত। আমিও তাই করতাম। বিরাটের এই অ্যাডজাস্টমেন্টটা দারুণ লেগেছে আমার। এতে ও অনেক বেশি বলের লাইনে গিয়ে খেলতে পেরেছে। যার ফলে বিরাটকে দুর্ধর্ষ কয়েকটা শটও আমরা মারতে দেখেছি। বিশেষ করে মিড উইকেট দিয়ে মারা বাউন্ডারিটা।"
পারথ টেস্টের পূর্বে কোহলির দীর্ঘ অফ ফর্ম নিয়েও বলেছেন গাভাসকর। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বপ্রথম লিটল মাস্টার বলেছেন যে, রজার ফেডেরার বা রাফায়েল নাদাল দীর্ঘদিন খেতাব না জিতলে যেমন তাঁদের নিয়ে আশঙ্কায় পড়ে যেতেন অনুরাগীরা, কোহলির ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। "রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জকোভিচ, এরা প্রত্যেকে চ্যাম্পিয়ন। এদের কেউ যদি কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালে হেরে যায়, লোকে বলতে থাকে ফর্মে নেই। কিন্তু অন্য কেউ যদি গ্র্যান্ডস্লাম সেমিফাইনালে যায়, লোকে বলে কী দারুণ খেলছে। বিরাটের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তেমনই। আসলে ও এত সেঞ্চুরি করেছে যে, সেঞ্চুরি না পেলে লোকে বলতে শুরু করে রান পাচ্ছে না। সত্তর-আশি করলেও হেলদোল হয় না। একই ভাবে বলা হতে থাকে কোহলির ফর্ম নিয়ে। আসলে ভারতীয় সমর্থকদের চাহিদা প্রচুর। আরাধ্য ৬০-৭০ করলে ওঁরা খুশি হন না। মেনে নিতে পারেন না। তাঁরা শুধু নিজেদের প্রিয় ক্রিকেটারকে সেঞ্চুরি করতে দেখতে চান। যে কারণে বলা হচ্ছে, ২০২৩ জুলাইয়ের পর আর সেঞ্চুরি করেনি বিরাট। অথচ সেটা এক বছর আগের তারিখ।"