সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকা ও ইরানের দ্বৈরথের জের। আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। বৃহস্পতিবারই খবর মিলেছে, ব্রেন্ট তেলের দর একলাফে ব্যারেল পিছু বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ মার্কিন ডলার। এর প্রভাব পড়বে ভারতের অর্থনীতিতেও।
[ইস্টারের বিস্ফোরণে ধৃত আরও ১৬, এখনও আতঙ্কে শ্রীলঙ্কা]
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সর্বোচ্চ অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। জ্বালানির এই মূল্য আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতে বাজারের এহেন গতির প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যেই টাকার দর কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দর কমেছে ৩৯ পয়সা। উল্লেখ্য, ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগ এনেছে আমেরিকা। পরমাণু গবেষণা নিয়ে ওয়াশিংটনের দেওয়া শর্ত মানেনি তেহরান। তাই বিশ্বের প্রথম সারির তেল উৎপাদনকারী দেশটি থেকে তেল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা।
তবে গত বছরের নভেম্বর মাসে সেই নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা ছাড় দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইরান থেকে তেল আমদানির জন্য ভারত-সহ আটটি দেশকে ছ’মাসের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিল ওয়াশিংটন। তারই মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। অর্থাৎ মে মাসের প্রায় শুরু থেকেই ইরান থেকে তেল আমদানি করতে পারবে না ভারত। আমেরিকার সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছে রাশিয়া। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-বাণিজ্যে ওপেক (অর্গানাইজেশন অব পেট্রলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে মস্কো। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দরে বড় ধরনের হেরফের হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয় ভেনেজুয়েলা এবং লিবিয়া। চলতি বছরে এই দু’দেশে চরম অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও তেলের দাম মোটামুটি একটা জায়গায় থিতু ছিল। কিন্তু ইরানকে ‘শাস্তি’ দিতে গিয়ে তেল আমদানির মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে পড়ে গিয়েছে ভারত সহ-আটটি দেশ।
এদিকে, আমেরিকার সিদ্ধান্তে প্রবল উষ্মা প্রকাশ করেছেন ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত ‘হঠকারী’। সেইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকা চাইছে ইরান অন্য কোনও দেশে তেল বিক্রি না করুক। কিন্তু সেই বাধা মানবে না ইরান। আয়েতুল্লার কথায়, “আমাদের প্রয়োজন মতো তেল উত্তোলন করব এবং তা রপ্তানিও করব।” এহেন পরিস্থিতিতে ভারতে জ্বালানির দরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর সত্যিই যদি সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়, তা হলে ভারতের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে কেন্দ্রের নতুন সরকারকে। সে বিজেপিই হোক বা কংগ্রেস।
[মহাকাশ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা, নিশানায় চিন ও রাশিয়া!]