সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনস্থ জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) স্মৃতিতে উৎসর্গকৃত জাতীয় স্মারক ও সংগ্রহশালার পত্রিকায় বিনায়ক দামোদর সাভারকরের (Vinayak Damodar Savarkar) বন্দনা নিয়ে এ বার বিতর্কে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকার। শুধু বন্দনাই নয়, পত্রিকায় দাবি করা হয়েছে যে মহাত্মা গান্ধীর চেয়ে কোনও অংশে কম ছিলেন না সাভারকর।
গান্ধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতি মিউজিয়াম থেকে প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা ‘অন্তিম জন’-এর হিন্দি সংস্করণের সাম্প্রতিক প্রচ্ছদ জুড়ে রয়েছেন সাভারকর। তাতেই লেখা হয়েছে যে মহাত্মা গান্ধীর চেয়ে সাভারকর কোনও অংশে কম নন। উল্লেখ্য, গান্ধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতি মিউজিয়ামের চেয়ারম্যান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাতেই আরও তীব্র হয়েছে বিতর্ক। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে ‘অমৃতমহোৎসব’ পালনের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে বিস্মৃত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাসে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়ার কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু, গান্ধীজির সঙ্গে সাভারকরের তুলনা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।
[আরও পড়ুন: বাদল অধিবেশনের শুরুতেই গণবিধ্বংসী অস্ত্র সংশোধনী বিল আনতে চলেছে সরকার]
সাভারকরকে নিয়ে তৈরি প্রচ্ছদ প্রবন্ধের মুখবন্ধ লিখেছেন গান্ধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতি মিউজিয়ামের ভাইস চেয়ারম্যান তথা বিজেপি নেতা বিজয় গোয়েল। তাতে সাভারকরকে ‘মহান দেশপ্রেমিক’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। লিখেছেন, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় যাঁরা একদিনও জেল খাটেননি, সমাজের যাঁদের কোনও অবদান নেই, তাঁরা সাভারকরের মতো দেশপ্রেমিকের সমালোচনার দুঃসাহস দেখাতে পারেন। ভারতের ইতিহাস এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে সাভারকরের স্থান এবং সম্মান মহাত্মা গান্ধীর থেকে কোনও অংশে কম নয়।” তিনি আরও দাবি করেন যে, স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য অবদান সত্ত্বেও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বহু বছর যোগ্য সম্মান এবং স্থান পাননি সাভারকর।
সাভারকরকে প্রচ্ছদের বিষয় করে বিতর্কের মুখে পড়ে গান্ধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতি মিউজিয়ামের আধিকারিকরা জানান, ২৮ মে সাভারকরের জন্মতিথি ছিল। সেই উপলক্ষেই সাভরকরকে সম্মান জানানো হয়। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আগামী কয়েক মাসে আরও অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীকে শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত গান্ধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতির উদ্দেশ্য হল, মহাত্মা গান্ধীর জীবনদর্শন, তাঁর আদর্শকে সমাজের সামনে তুলে ধরা এবং শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতিতে তার রূপায়ণ।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভোটেও টাকার খেলা চলছে! বিস্ফোরক অভিযোগ যশবন্ত সিনহার]
গান্ধীবাদী প্রাজ্ঞজন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মনোনীত আধিকারিকরাই মূলত এর কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব সামলান। সেখানে সাভারকর বন্দনা সমিচিন নয় বলে মনে করছেন অনেকেই। পত্রিকার জুন সংখ্যায় যে প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছে, তাতে সীতারামের আঁকা সাভারকরের একটি স্কেচ রয়েছে। ৬৮ পাতার পত্রিকার এক তৃতীয়াংশ জুড়ে হিন্দুত্ব নিয়ে প্রবন্ধ এবং নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। ‘হিন্দুত্ব’ নিয়ে সাভারকরের লেখা একটি প্রবন্ধও স্থান পেয়েছে সেখানে। তাঁর লেখা কোন কোন বই পড়া উচিত, তার তালিকাও দেওয়া রয়েছে পত্রিকায়।