সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যাশামতোই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আর দলের দায়িত্বে থাকতে চান না। এবার দলের উচিত নতুন সভাপতি খুঁজে নেওয়া। যদিও সঙ্গে সঙ্গে সোনিয়াকে দলের সভানেত্রী পদে কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। আর যদি নেহাতই সোনিয়া রাজি না হন, তাহলে রাহুল গান্ধীকে ফের ফিরিয়ে আনার দাবি জানান অন্য কংগ্রেস নেতারা।
২৩ জন বিদ্রোহী নেতার চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেসের অন্দরে অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো অবস্থা। কালকের চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গান্ধী পরিবারের প্রতি নিজেদের আনুগত্য জাহির করা শুরু করেছেন কংগ্রেসের প্রায় সব স্তরের নেতা। চার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে রাহুল-সোনিয়াকে সমর্থন করেছেন। তাঁদের সাফ কথা, রাহুল যদি দায়িত্ব নিতে রাজি থাকেন তাহলে তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক। আর তিনি যদি নেহাত রাজি না থাকেন, তাহলে কাজ চালিয়ে যান সোনিয়া। দলের লোকসভার সব সাংসদেরও একই বক্তব্য। শুধু যে দুজন ওই চিঠিতে সই করেছেন, সেই মনীশ তিওয়ারি এবং শশী থারুর ছাড়া বাকি সকলেই চাইছেন নেতৃত্ব থাক গান্ধী পরিবারের হাতে। এমনকী, কদিন আগে যিনি বিদ্রোহ করেছিলেন সেই শচীন পাইলটও গান্ধীদের সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন। কংগ্রেসের বেশিরভাগ নেতার ধারণা, গান্ধী পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হলে দলে ভাঙন আরও বাড়বে। যারা এই চিঠি লিখেছেন, তাঁরা শুধু ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা ভাবছেন। সোমবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল তো স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, যে সময় সোনিয়া অসুস্থ ছিলেন, যে সময় কংগ্রেস রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের সরকার বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে, তখন কেন এই চিঠি লেখা হল। যারা চিঠি লিখেছে, তাঁদের সঙ্গে নিশ্চই বিজেপির যোগাযোগ আছে। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির এই মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বলরা। হতাশ সিব্বল বলছেন, ৩ দশকের রাজনীতিতে কখনও দলের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলিনি। আর আজ আমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ? অন্যদিকে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন গুলাম নবি আজাদও।
[আরও পড়ুন: গান্ধী পরিবারে আস্থা নেই! নেতৃত্ব সংকট নিয়ে সোনিয়াকে চিঠি ২৩ জন কংগ্রেস নেতার]
মুশকিল হল বিদ্রোহীদের তোপ দাগলেও রাহুল নিজে দায়িত্ব নিতে নারাজ। প্রায় গোটা দলই চাইছেন স্থায়ীভাবে কংগ্রেস সভাপতির পদে তিনি বসুন। কিন্তু ঘনিষ্ঠ মহলে প্রাক্তন সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই তাঁর সভাপতি পদে ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই। আবার গান্ধী পরিবারের আরেক সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে সাধারণ সম্পাদকের থেকে বেশি দায়িত্ব তিনি নিতে চান না। অন্তত প্রকাশ্যে গোটা গান্ধী পরিবার চাইছে, তাঁদের বাইরেই কাউকে সভাপতি করা হোক। অগত্যা কংগ্রেস নেতারা অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের পথে হাঁটতে পারেন। তবে, ততদিনের জন্য সোনিয়া গান্ধীকে কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করা হবে।
The post কংগ্রেস সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ সোনিয়ার, দায়িত্ব নিতে নারাজ রাহুল-প্রিয়াঙ্কাও appeared first on Sangbad Pratidin.