সুকুমার সরকার, ঢাকা: বুধবার বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। এর ফলে প্লাবিত দেশের উপকূলবর্তী জেলাগুলি। অনেক জায়গায় বাঁধ টপকে জল প্রবেশ করছে। সুন্দরবনের দুবলার চর-সহ জেলেপল্লিগুলির বেশিরভাগ এলাকা এরই মধ্যে ডুবে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনা রুখতে চিন থেকে দেড় কোটি টিকা কিনছে বাংলাদেশ]
জানা গিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলি থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলিতে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী এলাকার নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের জল প্রবেশ করেছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ টপকে ওই জল প্রবেশ করছে। সুন্দরবনের দুবলার চর-সহ জেলেপল্লিগুলির বেশির ভাগ এলাকা এরই মধ্যে ডুবে গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যশ ও পূর্ণিমায় উপকূলীয় গলাচিপায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জেলায় দমকা বাতাস বইছে। ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট জল বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে ওয়াবদা বেড়িবাঁধের বাইরের গ্রাম ও বাড়িঘর তলিয়ে গিয়েছে। নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি জল হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর ও আশাশুনির কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদী-সহ উপকূলের সকল নদ-নদীর জোয়ারের জল স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। কপোতাক্ষ নদের বাঁধ ছাপিয়ে হু হু করে লোকালয়ে জল প্রবেশ শুরু করে। ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ ও পদ্মপুকুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ৪৩টি পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলবাসীকে নিরাপদে স্থানে ও সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দিনভর মাইকিং করা হয়। উপকূলবাসীকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য জেলার মোট ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার, ১৫০০ স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যশ অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলিতে এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি-সহ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।