শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সকালে সেতু দিয়ে যারা এসেছিলেন বাড়ি ফেরার পথে বিকেলে ফিরেই দেখলেন সেতু উধাও।বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার (Bankura) শালতোড়া বার্নপুর যাতায়াতের দামোদরের ওপর সেতুটি ভেঙে পড়ল। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অস্থায়ী সেতুটি জলের স্রোতে ভেসে গেল। বিপাকে পড়লেন দুই প্রান্তের নিত্যযাত্রীরা। তবে সেতুতে সেই সময় কেউ না থাকায় কোন প্রানহানির ঘটনা ঘটেনি।
ওপারে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার প্রান্তিক গ্রাম। এ পাড়ে পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর। দুই পাড়ের মানুষের কাছাকাছি থাকার একমাত্র ভরসা ছিল এই বাঁশের সেতু। কখনও রুজি-রুটির জন্য, কারখানা থেকে বাড়ি ফেরা বা কখনও আত্মীয়র বাড়ি, কখনও আবার হাসপাতালে চিকিৎসা। সবকিছুর ভরসা দামোদর নদের উপর এই বাঁশের অস্থায়ী সেতু। তিনদিনের প্রচন্ড বৃষ্টিতে সেই অস্থায়ী সেতু আবারও ভেঙে গেল চোখের সামনে। সকালবেলা যে মানুষটি এপারে এসেছিলেন রুজি-রুটির সন্ধানে। সেই মানুষটি ফিরে যাওয়ার সময় দেখছেন সেতুটি আর নেই। এই সমস্যা আজকের নয়, স্বাধীনতার পর থেকেই দামোদর নদের এই ঈশ্বরডা এবং কুকরাকুরি ঘাটে অস্থায়ী সেতু দিয়েই পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার প্রান্তিক মানুষদের যোগাযোগ রক্ষা হয়। নিত্যযাত্রী জিতেন্দ্র নাথ লায়েক, অমর বাউরি, মনিষা মাজিরা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর প্রভাবে শেষবার সেতু ভেঙে ছিল। তখনও বর্ষা আসেনি। তাই ‘যশ’-এর পরে আবারও বুক বেঁধে তৈরি হয়েছিল সেতু। নদীর বুকে বাঁশ ঠুকে সেতু করেছিল ওপার এবং এপারের মানুষজন। কিন্তু সেই সেতু আর বেশিদিন রইল না।
[আরও পড়ুন: সাঁইবাড়ির পর ভাঙড় নিয়ে ফের ফেসবুকে বিতর্ক উসকে দিলেন মীনাক্ষী, চাপে পড়ে মুছলেন পোস্ট]
টানা বৃষ্টির জেরে আসানসোলের একাধিক জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রেলের টানেলের যে সমস্ত এলাকা সেই এলাকাগুলি জলের নীচে চলে যায়। টানেল বন্ধ হয়ে যাওয়া জলবন্দী হয়ে পড়ে আসানসোলের বরাচক গ্রাম। আসানসোল পুরনিগমের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বরাচক গ্রাম। বরাচক জংশন সংলগ্ন এই গ্রামে যেতে হলে রেলের টানেলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। রেলপুলের নিচে জল যে ভাবে বইতে শুরু করেছে তাতে পায়ে হাঁটাও বিপদজনক হয়ে পড়েছে। একটি ছোট ম্যাটাডোর ভ্যান ওই রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে সেটিও জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। কোনও রকমের স্থানীয় বাসিন্দারা ওই গাড়িটিকে দড়ি ধরে টেনে তোলেন। বাসিন্দাদের আশঙ্কা এই অবস্থায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত গ্রামে যেতে পারবে না। অন্যদিকে, জামুড়িয়াতেও ভেঙে পড়ল গোয়ালঘর। চিচুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকতুলসী গ্রামে শ্যাম গড়াই নামক এক চাষী পরিবারে গোয়াল ঘর ভেঙে পড়ে। ১২টি ছাগল মারা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান চিচুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বনাথ সঙ্গুই। তিনি আপৎকালীন ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন পরিবারকে।