অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: করোনার (Corona Virus) ধাক্কায় বেসামাল গোটা দেশ। পাহাড় থেকে সমুদ্র সব জায়গায় একই চিত্র। আর তাই পাহাড়ে এবার শতবর্ষ পুরনো গ্লেনারিজকে (Glenary’s) আইসোলেশন সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বুধবার থেকে চালু হয়ে যাবে এই আইসোলেশন সেন্টার। এদিকে দার্জিলিংয়ের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে নিজের তদারকিতে স্যানিটাইজেশন করাচ্ছেন বিমল গুরুং (Bimal Gurung)।
সারা দেশের পাশাপাশি দার্জিলিং (Darjeeling) জেলাতেও হু-হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯৬ জন। তাই পাহাড়ের মানুষের স্বার্থে গ্লেনারিজকে আইসোলেশন সেন্টার বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর (Health Department)। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে গ্লেনারিজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলে তাঁরাও রাজি হয়ে যান। ব্রিটিশ আমল থেকে চলা বেকারি-সহ এই রেস্তরাঁ সকলের কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছেও এটা অন্যতম একটা আকর্ষণ। কিন্তু কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গ্লেনারিজের কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “পাহাড়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। এখন খাওয়া-দাওয়ার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। তাই সরকারের তরফে আমাকে অনুরোধ করতেই আমি রাজি হয়ে যাই।” তিনি আরও বলেন, “আপাতত রেস্তরাঁ সকলের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে বেকারি খোলা রাখা হবে। কিন্তু যদি দেখা যায় কেউ আসতে চাইছেন না, তাহলে সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘ভাড়া বাড়াতে চাই না’, বিকল্পের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বাস মালিক সংগঠনের]
এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই গ্লেনারিজ পরিদর্শন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা সেখানে কিছু বিষয় অদলবদল করার কথা বলেছেন। যা আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। আর বুধবার থেকে এখানে আপাতত ২০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার চালু হবে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ৪০ থেকে ৪৫ শয্যা করা হবে। এখানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা যাবে না। ভেন্টিলেশনের সুবিধা মিলবে শুধু সরকারি হাসপাতালেই। কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ডস বলেন, “আমার সঙ্গে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথা হয়েছে। উনি বলেছেন, এখানে দু’বেলা চিকিৎসকরা আসবেন। এছাড়া নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। আসলে পাহাড়ে নার্সিংহোমগুলিতে জায়গা নেই। শিলিগুড়িতেও কোথাও জায়গা নেই। তাই এখানেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
এদিকে রবিবার ছুটির দিনেই পাহাড়ের রাস্তায় সঙ্গীদের নিয়ে নেমে পড়েছেন বিমল গুরুং। দার্জিলিংয়ের ম্যাল, মহাকাল মন্দির, মার্কেট-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্যানিটাইজ করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। নিজে মুখে মাস্ক ও গ্লাভস পরে করোনা সচেতনতায় লিফলেট বিলি করছেন বিমল। আর তার সাথে পিপিই কিট পড়া এক ব্যাক্তি স্যানিটাইজ করে চলছেন। কোথায় কোথায় স্যানিটাইজ করতে হবে তার সিদ্ধান্ত বিমল নিজেই নিচ্ছেন। গত বছরই শিলিগুড়ির ইনডোর স্টেডিয়ামকে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছিল। তা এখনও চলছে। ত্রিবেণীতে একটি কোভিড সেন্টার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শোনা গিয়েছে, বর্তমান অতিমারী পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা আবার খুলতে পারে।