সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে কিছুতেই থামছে না ডেঙ্গুর তাণ্ডব। ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি! এখনও পর্যন্ত এই রোগের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৭৮ জন। দেশে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত যে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে তা মেনেও নিয়েছে সরকার।
প্রায় দু’দশক থেকে বাংলাদেশে আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। তখন শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয় এবং প্রাণ হারায়। কিন্তু বর্তমানে সব বয়সের মানুষের মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গু এখন আর শুধু রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ নেই, ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলেও। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। প্রতিদিনই সারা দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পটভূমিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার জরুরী অবস্থা জারি কিংবা মহামারী ঘোষণার কথা বললেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা উড়িয়ে দিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মাদক সাম্রাজ্য কার? রোহিঙ্গা শিবিরে জঙ্গিদের মধ্যেই গুলির লড়াই, মৃত ২]
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত এই রোগের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৭৮ জন। আক্রান্ত মোট ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৭২। তবে রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্ট মোতাবেক এই সংখ্যা আরও বেশি। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না। তাই পরিসংখ্যানে বিস্তর ফারাক থেকে যাচ্ছে। বলে রাখা ভালো, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশে ২৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ-সহ শহর এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য ২০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক (World Bank)। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও এই অর্থ ব্যবহৃত হবে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আরবান হেলথ, নিউট্রিশন ও পপুলেশন প্রজেক্ট’ শহরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। এই অর্থ শুধু ডেঙ্গু প্রতিরোধ নয়, শহরের অন্যান্য নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার কাজেও খরচ করা হবে। যেমন শহরের বস্তি এলাকার নাগরিকদের পুষ্টিমান উন্নয়নেও কর্মসূচি নেওয়া হবে।