সুমন করাতি, হুগলি: সোমবার সন্ধ্যে থেকে নিখোঁজ ছিল পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ও ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া দেব ঘোষ। আজ মঙ্গলবার দেবের গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে এলাকার একটি পুকুরপাড় থেকে। যা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও র্যাফ। ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলে অপরাধীদের ফাঁসির শাস্তি চেয়েছেন মৃত নাবালকের মা। তবে এনিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ পুলিশ।
জানা গিয়েছে, পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দিল্লি রোডের পাশে মামার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকত বছর বারোর দেব। বাড়ির উলটো দিকে একটি জায়গায় অফিস তৈরির কাজ চলছে। সেখানেই গ্যাস পাইপ লাইনের কাজ করতে আসেন বিহারে কিছু শ্রমিক। টিনের ঘর বানিয়ে সেখানেই থাকতেন শ্রমিকরা। দেব ওই শ্রমিকদের ফাইফরমাস খাটত। জল এনে দিত। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে চাউমিন, এগরোল আনতে পাঠিয়েছিলেন শ্রমিকরা। অভিযোগ তার পর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি দেবের। আজ সকালে তার বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি পুকুরেপাড়ে দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, দেবের গলায় কাটা চিহ্ন আছে।
[আরও পড়ুন: ইউসুফ পাঠানকে নাপসন্দ! নির্দল হয়ে ভোটে লড়াইয়ের হুঙ্কার হুমায়ুন কবীরের]
এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে দেবের পরিবার। মৃতের মা মামনি ঘোষের অভিযোগ, “ছেলেকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। জল তুলে দেওয়ার জন্য দুশো টাকা পেত ও। আমরা ভেবেছি সেই টাকাই আনতে গিয়েছে। রাতে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করি। তার পর এই কাণ্ড। ছেলে ক্লাস সিক্সে পড়ত। এই সেদিন আদি সপ্তগ্রামের হাইস্কুলে ভর্তি করে এলাম। আমার ওই ছেলের সঙ্গে কার কী শত্রুতা থাকতে পারে? যারা এরকম করেছে তাদের ফাঁসি চাই। কেল্ডস্টোরের ছেলেগুলো আমার ছেলেকে নিয়ে যায়। ওখানে মোট ২ দিন গিয়েছিল। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার সময়ে চাউমিন আনতে বের হল। আর বাড়ি ফেরেনি। আজ গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে।”
এদিন দেহ উদ্ধারের পর থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় ঝাপা এলাকায়। অভিযুক্ত সন্দেহে শ্রমিকদের ঘর ভাঙচুর করে এলাকার বাসিন্দার। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পোলবা থানার পুলিশ র্যাফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গিয়ে তা সামাল দেয়। পরে ঘটনাস্থলে আসেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কল্যাণ সরকার। দেহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামাবাড়া হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়।
ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। এনিয়ে কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, “আজ সকাল দশটা নাগাদ পুলিশ খবর পায়। নাবালকের মৃতদেহ পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। তার পর ঘটনাস্থলে এসে দেহটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সন্দেহ এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। নির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা হবে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
দেখুন ভিডিও: