অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: চার মাস আগে পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant Labourer) হিসাবে পাড়ি দিয়েছিলেন কেরলে। আর পাঁচজন শ্রমিকের মতো ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন পরিবারের সঙ্গে। তবে হঠাৎ করে বন্ধ হয় সেই যোগাযোগ। তবে তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য হয়।মা-ও ভেবেছিলেন, রাগের বশে ছেলে ফোন করছে না। কিন্তু আচমকা পুলিশ এমন একটা খবর নিয়ে এল, তাতে মাথায় পাহাড় ভেঙে পড়ল মুর্শিদাবাদের( Murshidabad) জলঙ্গির গৌরীপুর ভাঙ্গনপাড়ার শেখ পরিবারের মাথায়। শনিবার বিকেলে জলঙ্গি থানার পুলিশ ওই পরিবারকে জানিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে শরিফুল শেখ। দেহ রয়েছে মেদিনীপুরের(Medinipur) খড়গপুরে জিআরপির অধীনে।
মৃত শরিফুল শেখের বাড়ি জলঙ্গির গৌরীপুর ভাঙ্গনপাড়া এলাকায়। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় পরিবারের হাল ধরতে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন তিনি। তবে এবার প্রথমবার নয়। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বারবার পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে তিনি গিয়েছেন ভিনরাজ্যে। শেষবার কেরলের আঙ্গামালি এলাকায় রাজমিস্ত্রির সহযোগীর কাজে গিয়েছিলেন। তবে কেরলে যাওয়া শরিফুলের দেহ খড়গপুরে এলো কী করে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা।
পরিবারের অনুমান, হয়তো কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন শরিফুল। খড়গপুরে(Kharagpur) ট্রেন বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়ায়। সেই সময় ট্রেন থেকে নেমে হয়তো কোথাও যেতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে কেউ না থাকায় সঙ্গে সঙ্গে খবর পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ পকেটের কাগজপত্র হাতড়ে নাম-ঠিকানা পেয়ে জলঙ্গি থানায় যোগাযোগ করে জানিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন পরিবার। আত্মীয়-পরিজন ও গ্রামের লোকের সহায়তায় মৃতদেহ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: স্বপ্নের বয়স ৪৬, বাস্তবের গেরোয় আটকে স্কুল, শিক্ষার আলো জ্বালতে আশি পেরিয়েও নাছোড় শিক্ষক]
শরিফুলের বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা, স্ত্রী ও এক ছেলে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে। স্ত্রী নারগিসা বিবি জানান, “মাস দুয়েক থেকে একটু মনোমালিন্য হওয়ায় ফোন করত না স্বামী। আর শনিবার মৃত্যু সংবাদে এল। ছোট বাচ্চা নিয়ে কী করে সংসার চলবে তা বুঝতে পারছি না। কী করে এসব হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
[আরও পড়ুন: কথা না শুনলে ডাম্পার চাপা দিয়ে পিষে মারব’, ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে হুমকি TMC নেতার]
মৃতের দাদা আনারুল শেখ বলছেন, “হতদরিদ্র পরিবার। সরকারি সহযোগিতা না পেলে পরিবারটি বাঁচবে না।” মা ছিয়াতন বিবির বক্তব্য, “পুলিশের কথাতেই জানতে পারলাম ছেলে মারা গিয়েছে। কী হয়েছিল জানি না। এদিকে দুমাস বাড়িতে যোগাযোগও করেনি। ফলে পুলিশের কথাতেই ভরসা। বাকি কিছু জানি না”।