সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য বিশেষ আইপিএল কলম লিখছেন কেকেআর অধিনায়ক৷ গৌতম গম্ভীর মেনে নিচ্ছেন দশ বছরে এই টুর্নামেন্ট তাঁকে অনেকবার দার্শনিক করেছে, অনেকবার বোকা!
অসাধ্যসাধন করতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে কে? মানুষের শরীর, না কি মন? গত ন’বছরে আইপিএল-এ এমন সব কাণ্ড দেখেছি যা আমাকে দার্শনিকের মগজ ধার করতে বাধ্য করেছে৷ কখনও দেখেছি, বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে একজন ফিল্ডার সাধ্যের বাইরের ক্যাচ নিয়েছে৷ মনে মনে ভেবেছি, মানব শরীরের পক্ষে এর থেকে বেশি কিছু করে দেখানো সম্ভব নয়৷ ভুল প্রমাণিত হয়েছি৷ দশ বছরে কতবার এমনভাবে বোকা হয়েছি বলতে বসলে গুলিয়ে যাবে৷
শনিবার রাতে ফের বোকা হলাম একইভাবে৷ আমরা তখন ৯৯/২৷ ১৩ নম্বর ওভারে বল করতে এল নেহরা৷ আমার ও উথাপ্পা, দু’জনের মাথাতেই তখন রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার অঙ্ক চলছে৷ ঠিক তখনই যেন ম্যাজিক দেখলাম৷ নেহরার একটা হাফভলি রবিন অদ্ভুতভাবে মিড-অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে দিল৷ মনে মনে বললাম, এ তো ‘রবিন-গুড’ শট, আর কেউ পারে না৷ কিন্তু আবার বোকা হলাম৷
সন্ধ্যার দিকে তখন হায়দরাবাদ ব্যাট করছে৷ মজার ব্যাপার, তখন ওদের রানও ৯৯৷ রবিন-শো’কে আয়নায় হুবহু দেখলাম৷ কেবল বাঁ-হাতি নেহরার জায়গায় বোলার ডান হাতি ক্রিস ওকস ও ডান হাতি রবিনের বদলে ব্যাটসম্যান বাঁ হাতি যুবরাজ৷ ওকসের ফুল লেংথ বল যুবরাজ সোজা ব্যাটে খেলে দিল মিড-অফের উপর দিয়ে৷ শটটা ও ব্যাকফুটেখেলেছিল৷ আমি আবার ভাবতে বাধ্য হলাম, এমন শট যুবরাজ ছাড়া আর কেউ মারতে পারবে না৷ এটা অতিপ্রাকৃত ক্যাটেগরির শট৷ আমি এমনিতে ভয়ংকর প্রতিপক্ষ৷ কিন্তু ওই শট দেখে আমারও হাততালি দিতে মন ছটফট করছিল৷
একজন দাবাপাগল লোকও বলবে, যুবরাজের আউটটাই রবিবারের ইডেনে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল৷ ওই সময় ওকসের মাথা ঠান্ডা রাখতে পারার জন্য ওকে কৃতিত্ব দিতে হবে৷ আমাদের ফাস্ট বোলাররা ইয়র্কারের সন্ধানে রয়েছে৷ কিন্তু খুব সামান্যর জন্য টার্গেট মিস হচ্ছে৷ তবে আমি নিশ্চিত ওরা খুব শিগগির লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে৷ কেকেআরের দুই স্পিনার নারিন ও কুলদীপ নিজেদের কাজ খুব ভাল ভাবে করেছে৷ ওয়ার্নারের মতো ব্যাটসম্যানকে কুলদীপ একটা ফ্লাইটেড-ওয়াইড ডেলিভারিতে কীভাবে বোকা বানাল আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন৷ অনেক দিক দিয়ে ওটা ম্যাচের দ্বিতীয় টার্নিং পয়েন্ট৷
সোমবারের ম্যাচ খেলতে এখন দিল্লিতে৷ এবারের আইপিএল-এ দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বোলিং লাইন আপ সবচেয়ে প্রতিভাবান৷ তার উপর কোচ রাহুল দ্রাবিড়৷ অধিনায়ক জাহির খান৷ যার অর্থ, ৮০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা রয়েছে ওদের ডাগ-আউটে৷ ফিল্ডিং একটা জায়গা, যেখানে আমরা খুব একটা ভাল করছি না৷ তবে আশা করি, সেটা এখন অতীত৷ আমাদের দলটা নিয়ে আমি গর্বিত৷ আশা করি, দিল্লিতেও ম্যাচের পরে আরেকবার স্বাভাবিকের চেয়ে অন্যরকম উৎসব করব৷ আশাবাদী হওয়া সবসময় ভাল৷ তবে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস যেরকম খেলছে তাতে এখনই ভাল্লা-চাট অর্ডার দিয়ে রাখাটা বোকামি হতে পারে৷ যদিও সেটা জাস্ট এখনও পর্যন্ত ভাবছি!
The post জাহির খানের মগজাস্ত্র সামলানোই আজ নাইটদের বড় চ্যালেঞ্জ appeared first on Sangbad Pratidin.