সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেহাল রাস্তা, মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স। জ্বরে কাবু বছর উনিশের তরুণীকে খাটিয়ায় করেই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন আত্মীয়রা। চার কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনা আপাতত তোলপাড় ফেলেছে রাজ্যজুড়ে। বেহাল রাস্তার দায় কার? যোগাযোগ ব্যবস্থার এত খারাপ হওয়ার দায়ই বা নেবে কে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত সকলে। যথারীতি রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। আর এই হৃদয়বিদারক ঘটনা নিয়ে সমালোচনার আঁচ আরও বাড়িয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury)। তাঁর বেফাঁস মন্তব্য, ”মৃত্যু ছিল ভাগ্যে। রাস্তার জন্য মৃত্যু হয়নি।” তাঁর এই মন্তব্য অবশ্য সমর্থন করছে না শাসকদল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পালটা তরজায় নেমেছে বিজেপি।
মালদহের (Maldah) বামনগোলার গোবিন্দপুর মহেশপুর অঞ্চলের মালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মামনি রায়। দিনকয়েক ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। জ্বর হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকলে মামনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরের মোদিপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করার পরিকল্পনা করে পরিবার। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) পাওয়া যায়নি। কালবিলম্ব না করে খাটিয়ায় মামনিকে শুইয়েই হাসপাতালের দিকে রওনা দেন তাঁর স্বামী। কিন্তু যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় মামনির। স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেত্রী বীণা বসু কীর্তনীয়ার অভিযোগ, রাস্তা এতটাই খারাপ যে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা খাটিয়ায় করে নিয়ে যাচ্ছিল।
[আরও পড়ুন: নজরে চিনের সাবমেরিন বাহিনী, ভারতের হাতে ডুবোজাহাজ-ধ্বংসী অত্যাধুনিক যান]
এই ঘটনা নিয়ে বর্ধমানে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি রীতিমতো বিরক্তির সঙ্গে জবাব দেন, ”একশোর মধ্যে একজনের এমন ঘটনা ঘটলে সবটা কেন খারাপ বলা হবে? কারও একটা পায়ে কিছু হলে কি বলব গোটা শরীরেই আঘাত? যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাঁর ভাগ্যে মৃত্যু ছিল। রাস্তার জন্য হয়নি।” তাঁর এহেন মন্তব্য স্বভাবতই যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ তৈরি করেছে।
[আরও পড়ুন: রেললাইনে বসে ভিডিও গেম খেলার সময় অঘটন, ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন ২ যুবক]
তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানিয়ে দিয়েছেন, ”রাস্তার জন্য মৃত্যু হয়েছে, এভাবে বলা যায় না। তার কী পরিস্থিতি ছিল, সেটা দেখে বলতে হবে। তবে সিদ্দিকুল্লার ওইভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি।” এ নিয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, ”যদি রাস্তা নিয়ে বিতর্ক হয়, তাহলে তার দায় বিজেপির। ওখানে তো এতদিন বিজেপির পঞ্চায়েত ছিল। তারা রাস্তার কাজ করেনি কেন? স্বাস্থ্য বিভাগ রাজ্যের হলেও তো বিজেপির। তারা কাজ করেনি কেন?” যদিও জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য হরিহর মাহাতোর দাবি, ”দু, একটা জায়গা বাদ দিয়ে এলাকার সমস্ত রাস্তা হয়ে গিয়েছে। ওখানে অ্যাম্বুল্যান্স, চার চাকার গাড়িও চলে। রাস্তা খারাপ বলে অপপ্রচার করছে বিজেপি।”
দেখুন ভিডিও: