সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মন্দা চলছে। ঋণভারে জর্জর পরিবার। কিন্তু পাওনাদার সেকথা শুনবেন কেন? শোনেননি। উত্তর-পশ্চিম জার্মানির এক শহরে ঋণ মেটাতে না পারা পরিবার থেকে তাই পাওনাদার নিজের প্রাপ্য আদায় করে নিলেন নিজের মতো করে। যা করলেন, তা নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। বহু সমালোচিত।
পাঁচজনের পরিবার। স্বামী, স্ত্রী, তিন সন্তান। বাজার থেকে ঋণ নিয়েই দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। ক্রমশই বাড়ছিল ঋণের বোঝা। অথচ শোধও করতে পারছিলেন না। জার্মানির মতো দেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির এমন ছবিও দেখা যায়। আশ্চর্যের হলেও, এটাই খাঁটি বাস্তব। অন্তত উত্তর-পশ্চিম জার্মানির এই পরিবারের কাছে একেবারেই রুক্ষ বাস্তব। ধার নিয়ে দিনযাপন। ঋণের অঙ্ক বাড়তে বাড়তে পৌঁছে গিয়েছিল সাড়ে আটশো ডলার, ভারতীয় অঙ্কে যা প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এমন সময় পাওনাদার গিয়ে হাজির। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার কোনও উপায়ই জানা নেই তাঁদের। সেই উপায় বাতলে দিলেন পাওনাদার নিজেই, নিজের মতো করে।
[সদ্যোজাতের নাম মিরাজ রাখলেন রাজস্থানের দম্পতি]
প্রথমেই তিনি বাড়ির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন। ঝাড়াই বাছাই করে বুঝে নেন সম্পত্তির অর্থমূল্য। তুল্যমূল্য বিচার করে দেখা যায়, ওই পরিবারের সবচেয়ে দামী তাদের পোষ্য। পাগ প্রজাতির একটি কুচকুচে কালো কুকুর। যা তাঁরা উপহার পেয়েছিলেন। সেই কুকুরটিকেই অনলাইন মারফত নিলামে তোলা হয়। কুকুরটির দাম ওঠে ভারতীয় মুদ্রায় ৬০ হাজার ৪৬৩টাকা। ব্যস! সমস্যার চটজলদি সমাধান। কুকুর বিক্রির টাকাতেই শোধ হয়ে গেল ঋণ। পাওনাদার তো মহা খুশি। তাঁর কথায়, ‘একেবারে বাস্তবোচিত সমাধান।’
[জুতোর মধ্যে লুকিয়ে পাইথন, সফর করল ১৪,০০০ কিলোমিটার]
আপাতত ধার তো মিটল। কিন্তু পরম প্রভুভক্ত কুকুর এবং তার মালিকের এই বিচ্ছেদের তাদের অবস্থা কেমন, সেই খবর কি কেউ রেখেছেন? রাখেননি। কথায় বলে, মৃত্যু ছাড়া সারমেয়কে তার প্রভুর থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে না কেউ। জার্মানির এই পরিবার থেকে তাদেরই এক চারপেয়ে সদস্যকে পৃথক করে দিল – ঋণের বোঝা। উন্নত দেশের এই ছবি প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতোই। প্রিয় পোষ্যকে কোলছাড়া করে ধার মেটাতে হল, এই ভাবনাই আপাতত আচ্ছন্ন করে রেখেছে পাঁচ সদস্যের এই পরিবারকে। ধারের মর্ম টের পাচ্ছেন হাড়ে হাড়ে। জার্মানির এই কঠোর বাস্তব কাহিনি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হতেই নানা প্রতিক্রিয়ায় ভরে উঠতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা। কুকুর বিক্রি করে ঋণ শোধের বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, কুকুর বলেই এতটা হৃদয়হীন কাজ করা হল। কেউ আবার সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন। তাঁদের কথায়, কুকুরটি নাকি নতুন মালিকের কাছে ভালই আছে। কারও আবার সমালোচনা, যথেষ্ট অবস্থাপন্ন না হলে পোষ্য রাখার দরকার কী?
The post ঋণের ভার, পোষ্য বিক্রি করে চটজলদি সমাধানের আড়ালে করুণ কাহিনী appeared first on Sangbad Pratidin.