স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্য সরকারের নিয়োগ করা উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে পাঠানো বরখাস্তের নোটিস প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে জানালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এর আগে এই মামলায় রাজ্যপালের বরখাস্তের নোটিস আইনত সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তারপরই এদিন রাজ্যপালের তরফে আইনজীবী জয়দীপ কর আজ, শুক্রবারের মধ্যে ওই নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে দেন।
আইনজীবী মহলের দাবি, মূলত বিচারপতির ‘বরখাস্তের নোটিস আইনত সঠিক নয়’বলার জেরে চাপে পড়েই রাজভবন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (Kazi Nazrul University) অপসারণ ঘিরে চলা অচলবস্থা কাটাতে পিছু হঠল। বিষয়টি নিয়ে এদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, ‘‘আদালতের রায়কে আমরা সবসময় সম্মান করি। মান্যতা দিয়ে চলি। কিন্তু আইন অনুযায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের যেমন সম্মতি প্রয়োজন, তেমনই কাউকে অপসারণ করতে গেলেও রাজ্য সরকারকে জানানো উচিত বলে মনে করি। এই রায়ে আমরা খুশি।’’ এরপরই অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ফের যদি স্বেচ্ছাচারিতা ও অবিমৃষ্যকারিতার কিছু দেখি নিশ্চয়ই সেই মতো পদক্ষেপ নেবে সরকার ও দপ্তর।
[আরও পড়ুন: হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে সফরের আমন্ত্রণে বৈষম্য! ডাক পেল BJP, ‘ব্রাত্য’ বিরোধীরা]
কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আলোচনা করেই সাধন চক্রবর্তীকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ৩ মাসের জন্য উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু দিনকয়েক আগে আচমকাই উপাচার্য সরানো নিয়ে রাজভবনের নির্দেশে বলা হয়, ‘‘ওই উপাচার্য ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’ রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এরপরই মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। অপসারিত উপাচার্যর আইনজীবীর দাবি, ‘‘একজন উপাচার্যকে এভাবে বহিষ্কার বেআইনি। এমন শব্দ একজন ব্যক্তির সম্মানে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে।’’ মামলাকারীর আইনজীবীর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বিচারপতি কৌশিক চন্দও। বলেন, ‘‘এভাবে বহিষ্কার বেআইনি।’’ এরপরই এদিন ফের বিচারপতি চন্দর এজলাসে মামলার শুনানিতে উপচার্যও তাঁর পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র জানান, ‘‘আমার মক্কেল পদত্যাগ করবেন। তাঁর আর ১২ দিন চাকরির মেয়াদ রয়েছে। তার আগেই শুক্রবার রাজভবনে তিনি উপাচার্য পদ থেকে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন।’’ বিচারপতি চন্দ দু’পক্ষকেই তাঁর অনুমতি দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘যদি উপাচার্য নিজেই সরে যান কিছু বলার নেই। তবে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর নিয়োগ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে হয়। তাই তাঁকে সরানোর ক্ষেত্রেও সেটাই প্রযোজ্য।’’ অবশ্য এরপরই রাজ্যপালের আইনজীবী জয়দীপ কর পালটা দাবি করেন, ‘‘একবার নিয়োগ হয়ে গেলে তিনি আচার্যর অধীনে চলে যান।’’