আকাশ মিশ্র: প্রেম, বিয়ে, সুখে সংসার, হঠাৎ পরকীয়া, গল্পের মোড় ঘোরাতে দুর্বল যৌনজীবন! এ সব গল্প নিয়ে বলিউড পর্দায়ও যেমন হাজার হাজার ছবি তৈরি হয়েছে সেকালে, একালে। তেমনি ওটিটির বাড়বাড়ন্তর পরও এর পরিবর্তন নেই। কোনওটা আবার লিভ ইন রিলেশন কিংবা লং ডিসটেন্সের গল্প। কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে এ যাবৎ সিরিয়াস কিছু ছবি বা সিরিজ দেখা গেলেও, কমেডির ধাঁচে বিয়ে, বিচ্ছেদ, প্রেমের গল্পের সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে পরিচালক হার্দিক মেহতা বানিয়ে ফেললেন ‘ডিকাপলড’ সিরিজ (Decoupled Series Review)। আট এপিসোডের এই সিরিজ কিন্তু আপনাকে হাসাবে সঙ্গে ভাবাবেও।
ব্যাপারটা একটু খোলসা করা যাক। নেটফ্লিক্সের (Netflix) এই সিরিজ অন্যান্য সব কমেডি সিরিজ থেকে অনেক দিক থেকেই আলাদা। হ্য়াঁ, এতে সেক্স রয়েছে, ইঙ্গিতপূর্ণ সংলাপ রয়েছে। কিন্তু একেবারেই তা মোটা দাগের নয়। আর সিরিজের এই স্টাইলই ‘ডিকাপলড’কে অন্য়ান্য সিরিজ থেকে আলাদা করে।
[আরও পড়ুন: গোয়েন্দার ভূমিকায় ওয়েব সিরিজে ঋত্বিক চক্রবর্তী, মুক্তি পেল ‘গোরা’র টিজার]
এই সিরিজের সবচেয়ে স্ট্রং দিকই হল এর চিত্রনাট্য। কীভাবে এক দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের সঙ্গে তৎকালীন ঘটে যাওয়া সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয়গুলিকে মিশে দেন পরিচালক, তা সত্যিই বাহবা দেওয়ার মতো। যেমন, যে কোনও বিবাহবিচ্ছেই সেই দম্পতির সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে। আরিয়া ও শ্রুতির চরিত্র যেন এই বিষয়কে বার বার সামনে নিয়ে আসে। তবে শুধু এটাই নয়। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ পরা চরিত্রকেও সামনে এনে দেয় ‘ডিকাপলড’। সঙ্গে আধার সংযুক্তকরণ, পরিচারিকার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কুপ্রভাবকেও টেনে নিয়ে আসে এই সিরিজ।
আর মাধবনের অভিনয় থেকে চোখ ফেরানো যায় না। লেখকের চরিত্রে একেবারে পারফেক্ট তিনি। বাহবা দিতে হয়, মাধবনের কমিক টাইমিংকে। সুরভিন চাওলাও বেশ ভাল। তবে আলাদা করে নজর কেড়েছেন মীর। স্ট্য়ান্ডআপ কমেডিয়ান, সঞ্চালকের বাইরে তিনি যে দারুণ অভিনেতা তার প্রমাণ ‘ডিকাপলড’ সিরিজ। তবে এই সিরিজের একটাই দোষ, প্রত্যেক এপিসোডই খুব শ্লথ গতিতে এগোয়। হয়তো, আরিয়া ও শ্রুতির বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কনফিউশড অবস্থাকে বোঝাতেই পরিচালক এমন গতি বেছে নিয়েছিলেন। অন্যরকম এক সিরিজ দেখতে চাইলে, ‘ডিকাপলড’ দেখতেই পারেন। খারাপ লাগবে না। পরের সিজন দেখার উৎসাহকে জিইয়ে রাখে ‘ডিকাপলড’।