সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে আতঙ্কের নতুন নাম ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) (ISIS-K)। কয়েকদিন আগেই কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রায় ১৮০ জন মানুষকে খুন করেছে জেহাদি সংগঠনটি। তারপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন আফগানিস্তান থেকে খোরাসানকে দূরে রাখাতেই তালিবানের মঙ্গল। তবে সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে সাফ বলা হয়েছে যে ISIS-K ও তালিবান (Taliban) মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তান নিয়ে নয়া প্রস্তাবনা UNSC বৈঠকে, অনুপস্থিত চিন-রাশিয়া]
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ABC News-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আইএস (খোরাসান) ও তালিবানের মধ্যে যোগসাজশের কথা তুলে ধরা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক স্ট্যান গ্রান্টের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আইএস (খোরাসান), আল কায়দা ও তালিবান একই ছবির ভিন্ন অংশমাত্র। তাদের মধ্যে যোগাযোগ অত্যন্ত গভীর। ফলে আফগানিস্তানে তালিবানের শাসন কায়েম হওয়ায় দেশটি জেহাদিদের চারণভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ সজ্জন গোহেলের মতে, ইসলামিক স্টেটের হামলার ঘটনগুলি নিজের কাজে লাগবে তালিবান। জঙ্গি দমনের নামে আফগানদের উপর আরও অত্যাচার চালাবে তালিবরা।
এই বিষয়ে সাংবাদিক স্ট্যান গ্রান্ট জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) ও তালিবানের মধ্যে বিবাদ হতে পারে। কিন্তু দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য যতটা তার থেকেও বেশি তাদের মধ্যে মিল। শুধু তাই নয়, দুই জেহাদি গোষ্ঠীর মতবাদ এক হওয়ার ফলে নেটওয়ার্কও এক। আর দুই দলেরই শত্রু হচ্ছে আমেরিকা। ফলে ক্ষমতা দখলের জন্য কিছুটা লড়াই করলেও আদতে তারা একই। ফলে দিনের শেষে সবদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে আম আফগানরা। আর আইএস-এর বিরুদ্ধে বিশাল কোনও শক্ত পদক্ষেপ করবে তালিবান তেমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই।
উল্লেখ্য, মূল ইসলামিক স্টেট বা ‘ইসলামিক স্টেট ওফ ইরাক এন্ড সিরিয়া’-র (ISIS) শাখা সংগঠন হচ্ছে ইসলামিক স্টেট (খোরাসান)। এর যোদ্ধারা, নিহত ISIS প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির অনুগামী। এক্ষেত্রে খোরাসান বলতে ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশকে বোঝায়। মূলত আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশেই জেহাদি সংগঠনটির মূল ঘাঁটি। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করাই ISIS (K) সংগঠনের মূল লক্ষ্য। তাজিকিস্তান,উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে শিকড় ছড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।