সোমনাথ রায়, দিল্লি: করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখা হল রাজধানীর সীমান্ত। লকডাউনের পঞ্চম দফা শুরুর প্রথম দিনেই সাংবাদিক বৈঠক করে সেই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। সীমান্ত খুলে দিলেই বাড়তে পারে আক্রান্তের পরিমাণ। তাই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে আপাতত এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করা হল সীমান্ত।
করোনা ভাইরাস নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে, এই চরম সত্য উপলব্ধি করে রাজ্যে অর্থনীতির হাল ফেরাতে চান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাই লকডাউনের পঞ্চম পর্ব অর্থাৎ ‘আনলক ওয়ান’-এ অতি সাবধানী হয়েই রাজ্যপাট সামলাতে চান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সপ্তাহ শুরুর দিন সোমবারই, দিল্লির সীমান্ত আপাতত এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিক বৈঠক করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানান, “দেশে ক্রমেই বাড়ছে সংক্রমণের মাত্রা। অর্থনীতির হাল ফেরাতে রাজ্যে সব পরিষেবাই স্বাভাবিক করা হচ্ছে। তবে সংক্রমণ ঠেকাতে আপাতত এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে সীমান্ত। কারণ, বিভিন্ন পরিষেবায় ছাড় পেলেই দেশের বহু মানুষ এখানে আসবেন। সেক্ষেত্রে রাজ্যে দ্রুত ছড়াবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে জরুরি পরিষেবা ও এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যাতায়াত করতে পারবেন। ই-পাস দেখালে তাঁদের সীমান্তে আটকানো হবে না।”
[আরও পড়ুন:এবার করোনায় আক্রান্ত ICMR-এর বিজ্ঞানী, স্যানিটাইজ করা হচ্ছে গোটা হেড কোয়ার্টার]
ইতিমধ্যেই লকডাউন ৫.০ তে রাজধানীর পার্লার, সেলুন খুলে দেওয়া হচ্ছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্পা। অটো-টোটোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়। দিল্লি বাজারগুলি থেকে জোড়-বিজোড় নীতিও শিথিল করা হয়। তবে নাইট কারফিউ জারি থাকবে বলে জানিয়ে দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কেজরিওয়াল আরও বলেন, “আমরা যদি এখন সীমান্ত খুলে দিই, তাহলে সারা দেশ থেকেই মানুষজন চিকিৎসার জন্যে দিল্লিতে আসতে চাইবেন”। তাই সীমান্ত খোলার বিষয়ে রাজ্যের মানুষকে আগামী শুক্রবারের মধ্যে মতামত জানাতে অনুরোধ করেছেন আপ প্রধান। দিল্লিবাসীর মতামত জানতে মুখ্যমন্ত্রী ১০৩১ নামে একটি টোল ফ্রী নম্বর, একটি হোয়াটস অ্যাপ নম্বর (8800007722) ও একটি মেল আইডি দিয়েছেন (email delhicm.suggestions@gmail.com)।
তবে দিল্লিবাসীকে ভয় না পেয়ে মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে লড়াই করতে পরামর্শ দিয়েছেন। গত কয়েক বছরে বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় দিল্লিতে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাও উন্নত করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। জনসাধারণের চিন্তা লাঘব করতে মঙ্গলবার একটি অ্যাপেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। যার সাহায্যে কোন কোভিড হাসাপাতালে কটি আসন সংখ্যা রয়েছে তা মানুষ ঘরে বসেই জানতে পারবেন।
[আরও পড়ুন:মুখে নেই মাস্ক, চুলোয় সামাজিক দূরত্ব, আনলক ওয়ানের প্রথম দিনই কলকাতায় দেদার পুজোপাঠ]
বর্তমানে দেশের মধ্যে করোনা সংক্রমণের বিচারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি। ব্যস্ততম ওই রাজ্যে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সেখানে ৪৭০ জনেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
The post সঙ্কটকালে অন্য রাজ্যের নাগরিকদের চিকিৎসা দিতে নারাজ কেজরিওয়াল! বন্ধ দিল্লির সীমান্ত appeared first on Sangbad Pratidin.