shono
Advertisement

Breaking News

ধাক্কা বিরোধী ঐক্যে, লোকসভায় আপের বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের!

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
Posted: 01:11 PM Jul 03, 2023Updated: 01:14 PM Jul 03, 2023

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী’– শুধু বিজেপি (BJP) নয়। লোকসভা ভোটে দিল্লিতে আম আদমি পার্টির (AAP) ক্ষেত্রেও একই অবস্থান নিল প্রদেশ কংগ্রেস (Congress)। শনিবার এমনই প্রস্তাব নিল দিল্লি (Delhi) প্রদেশ কংগ্রেস। এর ফলে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী দলগুলির একমঞ্চে আসার উদ্যোগ ধাক্কা খেল বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়। ভোটের আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে হাইকম্যান্ড। কিন্তু কেবল দিল্লি নয়। দিল্লি, কেরল-সহ বেশ কয়েকটি রাজে্য রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই জোট শরিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে বাধ্য হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে মূলত দু’টি প্রস্তাব পাশ করানো হয়। প্রথমত, রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে যে ভালবাসার বার্তা দিচ্ছেন তা ছড়িয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে বাড়ি বাড়ি প্রচারের কাজ সংগঠিত করতে নেতা কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

[আরও পড়ুন: পওয়ারের এনসিপিতে ভাঙনের জের? পিছিয়ে গেল বেঙ্গালুরুর বিরোধী বৈঠক]

আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পাশাপাশি আপের বিরুদ্ধেও লড়াই করবে কংগ্রেস। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট, দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনে আপের সঙ্গে কোনও বোঝাপড়ায় যাবে না শতাব্দীপ্রাচিন দল। দিল্লিতে কংগ্রেস এবং আপের সম্পর্ক সর্বজনবিধিত। আপের জন্মলগ্ন থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই সকলের জানা। এখনও কংগ্রেসের একাংশ মনে করে আপের জন্ম হয় রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে। তিক্ততা আরও বাড়ে পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করে পাঞ্জাবের দখল নেয় কেজরিওয়ালের দল।

গত ২৩ জুন পটনায় বিরোধীদের বৈঠকেও দুই দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। দিল্লির অর্ডিন্যান্স বিতর্কে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে তদ্বির করা হলেও হাত শিবিরের তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অভিযোগ। বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজ শুরু করা থেকে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার ফর্মূলা দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আবার পাটনায় বৈঠক হয় তাঁর প্রস্তাব মেনেই। বৈঠকের মধ্যমনি ছিলেন তিনিই। মমতার প্রস্তাব মেনে বিরোধী নেতানেত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে সায় দেন। কিন্তু কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট শরিকদের রাজনৈতিক সমীকরণ যে স্বাভাবিক নয় তাও অজানা নয়।

[আরও পড়ুন: দলের সমর্থন শরদ পওয়ারের দিকেই, অজিত-সহ ৯ বিধায়কের পদ খারিজের আবেদন NCP-র]

বিধানসভা ভোটে সাফল্য পেলেও গত লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির সাতটি লোকসভা নির্বাচনেই বিজেপির কাছে পরাস্ত হয় আপ। এই নির্বাচনে কংগ্রেসের সমর্থন পেলে এবং দিল্লিতে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে ভোট পাটিগণিতে এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা বেশি আপের। সেই অঙ্ক মাথায় রেখে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে চাইছে দিল্লি এবং পাঞ্জাবের শাসকদল আপও। তাই কেন্দ্রের অধ্যাদেশ ইস্যুতে কংগ্রেসকে পাশে পেতে চেষ্টার কসুর করেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস সূত্রে খবর, আপের সঙ্গে সমঝোতা করার বিষয়ে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আপত্তি তো আছেই, গুজরাট কিংবা পাঞ্জাবের মতো রাজ্যেও কংগ্রেস নেতারা চাইছেন না আপের সঙ্গে হাত মেলাতে। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি কংগ্রেসকে দুর্বল করে এবং ভোটে দলের ভোট কেটে প্রকারান্তরে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে কেজরিবালের দল।

তবে দুই দলেই যে সব নেতা জোটের বিষয়ে আশাবাদী। তাঁদের ধারনা, লোকসভা ভোটের প্রায় একবছর বাকি। ১৩ জুলাই বেঙ্গালুরুতে জোটের বৈঠক রয়েছে। সেখানে ফের মুখোমুখি হতে পারেন রাহুল ও কেজরিওয়াল। সেখানে অধ্যাদেশ নিয়ে ফের কথা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কেন্দ্রের অধ্যাদেশ নিয়ে কংগ্রেসকে পাশে পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। ২০ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগে কংগ্রেসের সমর্থন আদায় করতে পারলে দু’দলের মধে্য দূরত্ব অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আর সেক্ষেত্রে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত আকবর রোডের হিমঘরে চলে যেতে পারে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement