সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসদমন ও কালো টাকা পাচার রোধে দু’দেশের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করা প্রভৃতি বিষয়ে ভারত ও কাতারের মধ্যে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হল৷ পাঁচ দেশ সফরে বেরিয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দু’দিনের সফরে কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছন৷ শনিবারই তিনি দোহায় এক চিকিৎসা শিবিরে ভারতীয় শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন৷
রবিবার প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা বিন নাসের বিন খালিফা আল থানির সঙ্গে৷ এই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদে মদত জোগানো বা সন্ত্রাসবাদীদের কোনওভাবে উৎসাহ দেওয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়ে সহমত হয় দুই দেশ৷ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক বিষয় খতিয়ে দেখতে একটি মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও হয়েছে এদিন৷ ওই কমিটি নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে৷ মোদি বলেন, “ভারত ও কাতারের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে৷ এর ফলে দু’দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে৷ কীভাবে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও প্রসারিত ও মজবুত করা যায় সে বিষয়ে কাতারের শেখ তামিনের সঙ্গে আমার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷” দু’দেশের মধ্যে আর্থিক তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এদিন দেশের ফিন্যান্স ইনটেলিজেন্স ইউনিটের সঙ্গে কাতার ফিন্যান্সিয়াল ইনফর্মেশন ইউনিটের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ অবৈধ উপায় বা হাওলার মাধ্যমে অর্থের আদান-প্রদান বন্ধ করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে দু’দেশই সহমত হয়েছে৷
কাতার সফরের দ্বিতীয় দিনে মোদি সেদেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের সঙ্গে এক ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন৷ ওই আলোচনায় কাতারের শিল্পপতিদের ভারতে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী৷ পরে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, “বিগত দু’বছরে সরকার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে৷ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত নিয়মকানুনে পরিবর্তন করা হয়েছে৷ এই মুহূর্তে দেশে ৮০ কোটি তরুণ-তরুণী রয়েছেন৷ রয়েছে বিপুল বাজার৷ এই শক্তি কাজে লাগাতে ভারতে বিনিয়োগ করুন৷ বিশেষত কৃষিজ পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ, প্রতিরক্ষা, রেল পর্যটনের মতো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা আছে৷ আমি ব্যক্তিগতভাবে কাতারের শিল্পপতিদের বলছি, তাঁদের উচিত এই সুযোগ গ্রহণ করা৷” পরে প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, গত দু’ বছরে কাতারে রফতানির পরিমাণ বিপুল বৃদ্ধি করেছে নয়াদিল্লি৷ তাঁর সরকারের ‘ভারতে তৈরি করো’ কর্মসূচি সফল করতে কেন সকলের এগিয়ে আসা উচিত সে বিষয়েও টুইট করেন মোদি৷
দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে কাতারের আমির আবদুল্লা বিন নাসের বিন খালিফা আল থানির প্রশংসা করেন মোদি৷ শনিবার আফগানিস্তান মোদিকে সেদেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান প্রদান করেছে৷ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, “এই সম্মান শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়৷ এই সম্মান গোটা দেশের৷ মোদিকে এই বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করার জন্য আফগান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই৷” শনিবারই মোদি ব্যক্তিগতভাবেও আফগান প্রেসিডেণ্ট আশরফ ঘানিকে ধন্যবাদ জানান৷ মোদি জানান, সরকারি কোষাগারের অপচয় আটকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন তিনি৷ এর জন্য অনেকে কাছেই খারাপ হতে হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরে তাজমহলের সামনে ‘টুইন হোটেল’ নির্মাণের জন্য কাতারের আলসাওয়ারি সংস্থার সঙ্গে ৫০০ কোটি টাকার চুক্তি হয় দ্য লীলা গ্রুপ ও আইয়ানা হোটেল অ্যান্ড রিসর্টের৷
The post সন্ত্রাস ও কালো টাকা রোধে ভারতের পাশে কাতার appeared first on Sangbad Pratidin.