ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সাবধানের মার নেই। অতি ব্যবহৃত এই চলতি প্রবাদ কোভিড আবহে অনেকটাই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাসের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জাও ভাইরাস ঘটিত রোগ। তবে করোনার মতো প্রাণঘাতী না হলেও শুরুতে দুই রোগের উপসর্গ একইরকম। করোনা ভাইরাসের মতো দ্রুত সংক্রমিত হয়। আবার নিউমোনিয়া (Pneumonia) ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমিত হলেও রোগের মূল টার্গেট বয়স্ক ও কো-মর্বিডিটি বা অন্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি। তাই শীতের ঠিক আগে কোভিড আবহে ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) ও নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। উদ্দেশ্য, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ার হাত ধরে মারণ ভাইরাস যেন শরীরে বাসা না বাঁধে।
তীব্র শ্বাসকষ্ট বা সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ), অ্যাজমার মতো সমস্যায় যাঁরা ভোগেন তাঁদের নিউমোনিয়ায় ভোগার সমস্যা বেশি। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই ৬৫ বছরের বেশি বয়সের প্রবীণ নাগরিকদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। ঠিক এই আশঙ্কা থেকেই এবার শীতের আগে এই দুই রোগকে অনেকেই অবহেলা করছেন না অনেকে। গৃহ চিকিৎসক বা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছে অনেক ক্ষেত্রেই দুই রোগের ভ্যাকসিন নেওয়ার সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে রীতিমতো লম্বা লাইন এই দু’টি ভ্যাকসিন পেতে।
[আরও পড়ুন : বয়স্কদের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে করোনা, প্রমাণ দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স স্বাস্থ্য কর্মী-সহ সব কর্মীকেই এই দুই রোগের প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রোটোকলে না থাকলেও এই দু’টি ভ্যাকসিন যাতে সব সরকারি কোভিড হাসপাতালের সাধারণ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া যায় তার জন্য আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবেন শীর্ষকর্তারা। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “করোনা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার একই উপসর্গ। শুরুতে বিশেষজ্ঞরাও বুঝতে পারেন না। তাই শুরুতেই যদি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়া থাকে তবে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন প্রতিবছর নিতে হয়। কিন্তু নিউমোনিয়া প্রতিষেধক একবার নিলে পাঁচ বছরের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে। অধিকাংশ বয়স্ক কোভিড রোগী দ্রুত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। ডা. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন আগে থেকে নেওয়া থাকলে করোনা তেমন মারাত্মকভাবে ঘায়েল করতে পারে না।”